‘বন্যা পরিস্থিতিতে ঝুঁকির মুখে লাখ লাখ শিশু, প্রয়োজন উদ্যোগ’

বন্যায় পানি মাড়িয়ে শিশুদের নিয়ে যাচ্ছেন এক অভিভাবকছবি: ইউনিসেফের সৌজন্যে

পূর্বাঞ্চলের ভয়াবহ বন্যায় অনেক শিশু তাদের প্রিয়জনকে হারিয়েছে, অনেকে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের ঘরবাড়ি ও বিদ্যালয়। ইউনিসেফের তথ্যমতে, ২০ লাখেরও বেশি শিশু এখন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এই শিশুদের সুরক্ষায় কিছু পরামর্শ দিয়েছে নাগরিক সমাজ।

আজ বুধবার এক যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে এই পরামর্শ দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়, বন্যায় প্রাণহানি এবং নিখোঁজের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বন্যার পানি ক্রমেই নামতে শুরু করায় মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। তবে সবচেয়ে বেশি সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে শিশুরা।

বন্যা–পরবর্তী কাজে যাঁরা অংশ নেবেন তাঁদের কর্মসূচিতে শিশুদের প্রাধান্য দেওয়ার আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে। শিশুদের সুরক্ষায় তাঁরা বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। সেগুলো হলো স্বাস্থ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করে সব শিশুকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফেরানো; কোনো শিশু যেন শিশুশ্রমে যুক্ত না হয়; শিশুরা যেন তাদের বসতভিটায় অভিভাবকদের সঙ্গে থাকতে পারে; কোনো শিশু যেন বাল্যবিবাহের শিকার না হয় এসব দিকে সতর্ক থাকা; শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকদের নিয়মিত যোগাযোগ রাখা, বিদ্যালয়ে না হলে বাড়িতেই যেন নিয়মিত পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিতে হবে; বন্যার কারণে যেসব এলাকার স্কুল বন্ধ সেসব এলাকায় যত দ্রুত সম্ভব স্কুলকে সম্পৃক্ত করে অস্থায়ী বিদ্যালয় বা শিশুবান্ধব স্থানের ব্যবস্থা করতে হবে; যেসব শিক্ষার্থীর বইখাতা নষ্ট হয়ে গেছে তাদের জন্য সেগুলোর ব্যবস্থা করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের জন্য বিদ্যালয়ভিত্তিক মিড ডে মিল চালু করতে হবে।

নাগরিক সমাজের পক্ষে এই যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন লেখক ও গবেষক গওহার নঈম ওয়ারা, শিশু অধিকার ও উন্নয়ন কর্মী আসিম মুনীর, লেখক ও শিশু অধিকার কর্মী পুলক রাহা, শিশুসাহিত্যিক ও লেখক দীপু মাহমুদ, ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণারত সংবাদকর্মী নাজনীন নাসিরসহ ২০ জন নাগরিক।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা সবচেয়ে ভয়ংকর বন্যায় প্রাথমিক হিসাবে ১১টি জেলার ৭৭টি উপজেলার প্রায় ৫৬ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।