নতুন পেনশন ব্যবস্থা আর্থিক ঘাটতি পূরণের কৌশল: শিক্ষক নেটওয়ার্ক

‘প্রত্যয়’ পেনশন স্কিম বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন শিক্ষক নেটওয়ার্ক। তারা শিক্ষকদের জন্য বিদ্যমান পেনশন ব্যবস্থা পুনর্বহাল ও স্বতন্ত্র বেতন-স্কেলের দাবি জানিয়েছে।

এ নিয়ে বুধবার গণমাধ্যমে একটি বিবৃতিতে পাঠিয়েছে শিক্ষক নেটওয়ার্ক। নেটওয়ার্কের পক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক গীতি আরা নাসরীন ও সামিনা লুৎফা বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন। বিবৃতিতে অনলাইনে স্বাক্ষরকারী হিসেবে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৭ জন শিক্ষকদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিদ্যমান পেনশন সুবিধা উঠিয়ে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের নামে নতুন ব্যবস্থা চালু সরকারের আর্থিক ঘাটতি পূরণের একটি কৌশল। অংশীজনের সঙ্গে কোনো আলোচনা-পরামর্শ ছাড়াই এ ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়া সরকারের স্বেচ্ছাচারী আচরণের আরেকটি প্রকাশ।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সরকারের অব্যবস্থাপনা ও দুর্বলতাকে পুঁজি করে কেউ কেউ সীমাহীন লুটপাট করছে, দেশের ব্যাংক লোপাট করে বিদেশে মূলধন পাচার করছে। সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তা আর ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট অবৈধ টাকার পাহাড় তৈরি করে সম্পদ বিদেশে পাচার করছে। সরকারকে এসবের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায় না। বরং দেখা যায় জনগণের ওপর তথাকথিত উন্নয়নের ব্যয় চাপাতে। সরকার যে উন্নয়নের দাবি করে, সেই দাবি সত্য হলে পেনশনের সুবিধা বাড়ার কথা, কমার কথা নয়।

‘প্রত্যয়’ পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন এবং কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ জুলাই থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করে আসছে। শিক্ষক নেটওয়ার্ক বিবৃতিতে এই আন্দোলনের সঙ্গে পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের ৫৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ১৬ হাজারের বেশি শিক্ষক ও প্রায় ৩৪ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী ‘প্রত্যয়’ পেনশন স্কিম প্রত্যাখ্যান করেছে।

বিবৃতিতে শিক্ষক নেটওয়ার্ক চারটি দাবির কথা উল্লেখ করেছে। সেগুলো হলো নতুন পেনশন ব্যবস্থা ‘প্রত্যয়’ বাতিল করে বিদ্যমান পেনশন ব্যবস্থা পুনর্বহাল করা। শিক্ষকদের পেশাগত মর্যাদা ও আর্থিক সুবিধা বৃদ্ধির জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন করা। দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ শিক্ষার্থী-সহায়তা স্কিম চালু করা এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যার সঙ্গে আনুপাতিক হারে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক নিয়োগ, অবকাঠামো ও গবেষণাগার তৈরি করা।

বিবৃতিদাতা অন্যান্য শিক্ষকেরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবায়েত ফেরদৌস, কাজী মারুফুল ইসলাম, মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, মোহাম্মদ আজম, তাসনীম সিরাজ মাহবুব, সাজ্জাদ সিদ্দিকী, জোবাইদা নাসরীন, মোহাম্মদ মজিবুর রহমান, ফাহমিদুল হক, মোশাহিদা সুলতানা, দীপ্তি দত্ত, কামরুল হাসান মামুন ও রুশাদ ফরিদী।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাহমুদা আকন্দ, মানস চৌধুরী, মো. আজমল মাহমুদ খান, আইনুন নাহার, মির্জা তাসলিমা সুলতানা, রায়হান রাইন, মাসউদ ইমরান মান্নু, সুমন সাজ্জাদ, শরমিন্দ নীলোর্মি, স্বাধীন সেন, সাঈদ ফেরদৌস, মোহাম্মদ গোলাম রববানী, মোহাম্মদ মোজাহিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ রায়হান শরীফ, মালিহা নার্গিস, বোরহান উদ্দিন, নুরুল হুদা সাকিব, মাহমুদুল সুমন, সৈয়দ নিজার, স্নিগ্ধা রেজওয়ানা, মো. বশিরুজ্জামান, শামীম আওরঙ্গজেব, খন্দকার হালিমা আখতার, আমিনা মমি ও মুমতাহানা মৌ।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হাবিব জাকারিয়া, সেলিম রেজা নিউটন, আ-আল মামুন, অধ্যাপক, কাজী শুসমিন আফসানা, সৌভিক রেজা, কনক আমিরুল ইসলাম, সুস্মিতা চক্রবর্তী, কাজী মামুন হায়দার ও কাজী রবিউল আলম; চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদিজা মিতু, মোশরেকা অদিতি হক, হাসান তৌফিক ইমাম, মো. সাদেকুল ইসলাম ও জি এইচ হাবীব; খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুল্লাহ হারুন চৌধুরী, মৌমিতা রায়, আবুল ফজল ও ইমরান কামাল।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. হাম্মাদুর রহমান ও কাজী ফরিদ; জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাসির আহমেদ, সিত্তুল মুনা হাসান, ফাতেমা সুলতানা শুভ্রা, ফারহানা সুস্মিতা ও সৌম্য সরকার; শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারজানা সিদ্দিকা, জায়েদা শারমিন, মাসুদ পারভেজ, মো. এমদাদুল হক, তানভীর আহমেদ, মো. শাহজাহান মিয়া, বেলাল আহমেদ, মো. মনিরুল ইসলাম, মো. নাভিলা কাওসার ও আবু বকর সিদ্দিক।

গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দিপংকর কুমার, শামস্ আরা খান, আরাফাত রহমান, শামীমা আক্তার, জপতোষ মণ্ডল, সুকান্ত বিশ্বাস, জাকিয়া সুলতানা মুক্তা, মো. রাকিবুল ইসলাম, মো. নেসারুল হক, সাকিফা আকতার, আরিফুজ্জামান রাজীব, সাদিয়া আফরিন, মর্তুজা আহমেদ ও মো. শফিকুল ইসলাম; বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্মেষ রায় ও সঞ্জয় কুমার সরকার; ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. সাজ্জাদ হোসেন জাহিদ ও মো. মাহবুব মুর্শিদ।

আরও পড়ুন

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ামুন নাহার; কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাহিদা বেগম, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের লাবণ্য মণ্ডল; ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসমাইল সাদী, সৌমিত জয়দ্বীপ ও শরৎ চৌধুরী; ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের বেগম শারমিনুর নাহার, অলিউর সান ও কাব্য কৃত্তিকা; বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. আসওয়াদ আল হক সরকার; যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিনু কিবরিয়া ইসলাম; বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির মনির হোসেন এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোছা. রেশমা আক্তার।