যমুনা টিভির প্রতিবেদক ও উপস্থাপকের বিরুদ্ধে মামলা
উদ্দেশ্যমূলক ও মানহানিকর প্রতিবেদন প্রচারের অভিযোগে বেসরকারি যমুনা টেলিভিশনের এক উপস্থাপক ও এক প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে চট্টগ্রাম আদালতে। মামলায় আসামিরা হলেন যমুনা টেলিভিশনের ইনভেস্টিগেশন ৩৬০৹ নামক অনুষ্ঠানের ইনভেস্টিগেশন সেল’র প্রতিবেদক সাজ্জাদ পারভেজ এবং একই অনুষ্ঠানে উপস্থাপক মীর আহসান।
আজ সোমবার চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম কুদরত-এ-এলাহী’র আদালতে মানহানির অভিযোগে সাবেক পরিবেশমন্ত্রী ও রাঙ্গুনিয়ার সংসদ সদস্য হাছান মাহমুদের একান্ত সহকারী এনায়েতুর রহিম একটি মামলা করেন। আর তথ্য প্রযুক্তি আইনে অপর মামলাটি করেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সুখী বাংলা ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন।
মামলার বাদী এনায়েতুর রহিম বলেন, চলতি মাসের ৫ তারিখ ইনভেস্টিগেশন ৩৬০৹ নামক ২১ মিনিটের ওই অনুষ্ঠানে বলা হয় রাঙ্গুনিয়ার শেখ রাসেল এভিয়ারি পার্ক নির্মাণে ৩৫ কোটি টাকা জলবায়ু তহবিল থেকে ব্যয় করা হয়। বাস্তবে ওই প্রকল্পের অর্থ জলবায়ু তহবিল থেকে নয়, এসেছে রাজস্ব খাত থেকে। আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে একজন ভারতীয় ঠিকাদার কাজটি সম্পন্ন করেছেন।
চট্টগ্রাম জেলা আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আবুল হাশেম প্রথম আলোকে বলেন, আদালত মামলা দুটি গ্রহণ করে তথ্য প্রযুক্তি আইনে দায়েরকৃত মামলাটি নিয়মিত এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন। আর মানহানির মামলাটি গ্রহণ করে আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন।
জানতে চাইলে যমুনা টেলিভিশনের প্রতিবেদক সাজ্জাদ পারভেজ প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিবেদনের অনুকূলে যাবতীয় কাগজপত্র রয়েছে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে কোনো প্রতিবেদন তৈরি করা হয়নি।
সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, তাঁরা তাঁদের প্রতিবেদন সংক্রান্ত বিষয়ে হাছান মাহমুদের বক্তব্য জানতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেন, অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলেই হাছান মাহমুদ উত্তেজিত হয়ে যান।
বাদীর আইনজীবী ইব্রাহীম হোসেন বাবুল জানান, আসামিরা উদ্দেশ্যমূলক মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে যমুনা টেলিভিশনের ‘ইনভেস্টিগেশন ৩৬০৹’ নামক অনুষ্ঠানে ‘জলবায়ু তহবিলে নয়ছয়’ শিরোনামে সম্পূর্ণ কল্পনাপ্রসূত প্রতিবেদন প্রচার করেছেন। সাবেক পরিবেশমন্ত্রী হাছান মাহমুদের মানহানি করতেই উদ্দেশ্যমূলক এই প্রতিবেদন প্রচার করা হয়েছে। তাই ৫০১ ও ৫০২ ধারায় মানহানির মামলাটি দায়ের করেছেন।
এ ছাড়া বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সুখী বাংলা ফাউন্ডেশনের সঙ্গে জলবায়ু তহবিলের কোনো সম্পৃক্ততা না থাকা সত্ত্বেও ওই সংস্থাকে জড়িয়ে মিথ্যা বানোয়াট প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। আইনজীবী জানান, জলবায়ু তহবিলের জন্য সুখী বাংলা ফাউন্ডেশন নামের সংস্থাটি কখনো কোনো আবেদনই করেনি। ফলে এই সংস্থাটি জলবায়ু তহবিলের অর্থ নয়ছয় করেছে মর্মে যমুনা টেলিভিশন যে মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তার বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি ও ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক আইনে আরেকটি মামলা করা হয়েছে।