বর্তমান সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু পার্বত্য চুক্তির ২২ বছর পরও চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো এখনো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হয়নি। অথচ দেশের স্বার্থে এই চুক্তি বাস্তবায়ন হওয়া অতীব জরুরি৷
জাতিসংঘ ঘোষিত ‘আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস-২০২০’ উপলক্ষে রোববার বিকেলে এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনায় এসব কথা বলেন বিশিষ্টজনেরা। ‘বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম’ এই সভার আয়োজন করে৷
অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ভূমি বেদখল হচ্ছে। নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ করার হীন উদ্দেশ্যে তাদের ওপর হামলা চালানোর ঘটনা ঘটছে। ক্ষুদ্র জাতিসত্তার নারীদের ওপর নির্যাতন ও সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
সমতলের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠনের দাবি জানান ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য।
ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রয়োজন বলে জানান বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান অভিযোগ করেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষ আজ নিজ দেশেই যেন প্রবাসী। নিজস্ব পরিচয় দিতে গেলে তারা হেনস্তার শিকার হয়। তাদের পাশে দাঁড়ানোর কেউ নেই৷ বিচারবহির্ভূত হত্যা, অধিকারহীনতা, বঞ্চনা, মৌলিক অধিকারহরণ, দখল, উচ্ছেদ, ভূমি অধিকার ভূলুণ্ঠিত হওয়ার যত আয়োজন, তার সবকিছুরই শিকার হচ্ছে তারা।
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত, মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, সাদেকা হালিম, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন প্রমুখ।
এর আগে সকাল ১০টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে ভার্চ্যুয়াল ওই আয়োজনের উদ্বোধন করা হয়। এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং। এ ছাড়া ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, কবিতা পাঠসহ নানা আয়োজন।