ফেরিঘাটে উল্টে গেল ট্রাক, যানবাহন পারাপার বন্ধ
রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে তীব্র স্রোতের পাশাপাশি ফেরির স্বল্পতা থাকায় যানবাহন পারাপার ব্যাহত হচ্ছে। গোয়ালন্দে পদ্মার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় দৌলতদিয়ার দুটি ফেরিঘাটের সংযোগ সড়ক তলিয়ে গেছে। আজ মঙ্গলবার ৩ নম্বর ঘাটে ডুবন্ত সড়কের গর্তে চাকা পড়ে ট্রাক উল্টে যাওয়ায় ঘাটটি বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে মাত্র তিনটি ঘাট দিয়ে যানবাহন ফেরিতে ওঠা–নামা করছে।
ঈদের আগে ঘাটের পরিস্থিতি দেখতে সকালে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক দৌলতদিয়া ঘাট পরিদর্শনে আসেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিআইডব্লিউটিএ দৌলতদিয়া কার্যালয় সূত্র জানায়, আজ সকাল ৯টার দিকে পাটুরিয়া থেকে আসা একটি ফেরি দৌলতদিয়ার ৩ নম্বর ঘাটে ভেড়ে। ফেরি থেকে নামার কিছুদূর পর মাঝপথে পণ্যবাহী একটি ট্রাক ডুবন্ত সড়কের মধ্যে গর্তে চাকা পড়ে উল্টে যায়। এরপর থেকে এ ঘাট দিয়ে ফেরিতে যানবাহন ওঠা–নামা বন্ধ রয়েছে। ট্রাকটি ফরিদপুরের করিম জুট স্পিনার্স লিমিটেডের জরুরি সরবরাহ কাজে নিয়োজিত। বিকেল পর্যন্ত ঘাটে সংস্কারকাজ করছিল রাজবাড়ী সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ) ও বিআইডব্লিউটিএ। সড়কে ইটের আধলা ও বালুভর্তি বস্তা ফেলে সংস্কারকাজ করা হচ্ছে। কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ৩ নম্বর ঘাটটি বন্ধ থাকবে।
দৌলতদিয়ার বাকি ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ঘাট চালু রয়েছে। ছয়টি ঘাটের মধ্যে মাত্র তিনটি ঘাট চালু থাকায় যানবাহন পারাপার ব্যাহত হচ্ছে। এর মধ্যে ৬ নম্বর ঘাটের সংযোগ সড়কও তলিয়ে গেলে সওজ ও বিআইডব্লিউটিএ যৌথভাবে ইটের আধলা ও বালুভর্তি বস্তা ফেলে সংস্কারকাজ করে ঘাটটি চালু রেখেছে। এমন পরিস্থিতিতে বন্যার পানি আরও বাড়লে ঝুঁকি আরও বাড়বে।
বন্যার পানি গোয়ালন্দ পয়েন্টে বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দৌলতদিয়া ঘাটের পরিস্থিতি দেখতে আসেন বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক। এ সময় বিআইডব্লিউটিএর আরিচা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নিজাম উদ্দীন পাঠান, গোয়ালন্দের ইউএনও আমিনুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল্লাহ আল-মামুন, বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক আবু আবদুল্লাহ, দৌলতদিয়া নৌ–পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবদুল মোন্নাফ, দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান মণ্ডল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক বলেন, সমন্বিত চেষ্টার মাধ্যমে দৌলতদিয়ার চারটি ঘাটই চালু রাখা হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সব কাজ সমন্বয় করে বাস্তবায়ন করা হবে। স্থায়ীভাবে নদীভাঙন রোধ ও দৌলতদিয়া ফেরিঘাট আধুনিকায়ন করার জন্য একটি বড় প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ দৌলতদিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলী মো. শাহ আলম বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বিআইডব্লিউটিএর সঙ্গে রাজবাড়ী সওজ যৌথভাবে ঘাট সংস্কারের কাজ করছে। ৩ নম্বর ঘাটের সংযোগ সড়কের দুই পাশে বিআইডব্লিউটিএ বালুভর্তি বস্তা ফেলছে, যাতে আর বাইরের পানি সড়কের মধ্যে না আসতে পারে। সড়কের মধ্যে সওজ ইটের আধলা ফেলে রাস্তার সংস্কারকাজ করছে। আশা করা যাচ্ছে, রাতের মধ্যেই ঘাটটি চালু করা সম্ভব হবে।