স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখার পরিচালক ওএসডি
সিদ্ধান্তটি গতকালই হয়েছিল। আজ কেবল আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক আমিনুল হাসানকে পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে সরকার। তাঁকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ।
একই প্রজ্ঞাপনে অধিদপ্তরের উপপরিচালক ও কর্মসূচি ব্যবস্থাপক মো. ফরিদ হোসেন মিঞাকে হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) দেওয়া হয়েছে। এর আগে গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেছিলেন, আমিনুল হাসান আর এই পদে থাকছেন না, এটি নিশ্চিত হয়ে গেছে।
রিজেন্ট কেলেঙ্কারির পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখার কর্মকাণ্ড নিয়েও নানা সমালোচনা চলছে। এর আগে গত মঙ্গলবার বিতর্কের মুখে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ পদত্যাগ করেন।
নতুন ডিজি নিয়োগের বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, সর্বোচ্চ পর্যায়সহ সবাই মিলে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। দরকার হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও আলোচনা করে নেওয়া হবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রমতে, নতুন মহাপরিচালক নিয়োগ নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। মূলত এই পদে চিকিৎসকদেরই নিয়োগ দেওয়া হয়। এই পদের জন্য কয়েকজন চিকিৎসকের নাম নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে সূত্রমতে, বিদ্যমান প্রেক্ষাপটে সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তে এই নিয়োগ চূড়ান্ত হবে। ফলে কে হবে এটা সুনির্দিষ্ট করে বলা যাবে না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনার অভিযোগ সব সময় ছিল। করোনা মহামারির সময় এসব অভিযোগ আরও বড় আকারে দেখা দেয়। স্পষ্ট হয়ে ওঠে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের অদক্ষতা, ব্যর্থতা। জেকেজি ও রিজেন্ট কেলেঙ্কারির পর মানুষ হতবাক হয়। অনেক মানুষ মনে করে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জড়িত না থাকলে এই মাত্রার দুর্নীতি করা সম্ভব না।
এর আগে গত ২২ জুন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিকল্পনা, তদারক ও গবেষণা শাখার পরিচালক মো. ইকবাল কবিরকেও তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয় হয়।
শুধু অধিদপ্তরই নয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ভূমিকাও বেশি কিছুদিন যাবৎ প্রশ্নবিদ্ধ। এর আগে গত মাসের গোড়ার দিকে করোনা মহামারি মোকাবিলায় আলোচনা সমালোচনার মধ্যে তখনকার স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলামকে বদলি করে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব করা হয়। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে সচিব হিসেবে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন মো. আব্দুল মান্নান।
এ ছাড়া সচিবের পর তিনজন অতিরিক্তি সচিবকেও বদলি করা হয়। এর মধ্যে হাসপাতাল অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব সিরাজুল ইসলামকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে এবং ওষুধ প্রশাসন অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব ইসমাইল হোসেনকে ভূমি মন্ত্রণালয়ে এবং কোভিড -১৯ এর বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত মিডিয়া সেলের প্রধান ও অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান খানকে বদলি করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক করা হয়েছে।
বেশ কিছুদিন ধরে স্বাস্থ্যখাতের প্রধান হিসেবে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব ও ভূমিকা নিয়েও বিভিন্ন মহলে সমালোচনা চলছে । সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অনেকে তাঁর সমালোচনা করে মন্তব্য করছেন। গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকেরা মন্ত্রীর পদত্যাগের বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি এড়িয়ে যান।