চিকিৎসাবর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কী পদক্ষেপ, জানতে চান হাইকোর্ট
চিকিৎসাবর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিধিমালা অনুসারে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে পরিবেশ সচিবকে আগামী ১০ আগস্টের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এক রিটের শুনানি নিয়ে আজ রোববার বিচারপতি জে বি এম হাসানের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ১২ আগস্ট পরবর্তী আদেশের জন্য দিন রাখা হয়েছে।
এর আগে ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর চিকিৎসাবর্জ্য (ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ) বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। এই বিধিমালার পুরোপুরি বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে পরিবেশ বিশেষজ্ঞ আনিকা আলী ও মানবাধিকার সংগঠন ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে ১৪ জুলাই ওই রিট করা হয়।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. হুমায়ন কবির ও মোহাম্মদ কাউছার। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল দেবাশিস ভট্টাচার্য ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম সাইফুল আলম।
উল্লেখ্য, বিধিমালার ৩ বিধিতে কর্তৃপক্ষ গঠন: ৭ বিধিতে চিকিৎসাবর্জ্য পৃথকীকরণ, প্যাকেটজাতকরণ, পরিবহন ও মজুতকরণ; ৮ বিধিতে চিকিৎসাবর্জ্য বিনষ্টকরণ ও ভস্মীকরণ এলাকা নির্ধারণ এবং ৯ বিধিতে চিকিৎসাবর্জ্য পরিশোধন, বিশোধন ও অপসারণ বিষয়ে বলা আছে।
পরে আইনজীবী মো. হুমায়ন কবির প্রথম আলোকে বলেন, বিধি অনুযায়ী দেশের প্রতিটি বিভাগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালকের সভাপতিত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কর্তৃপক্ষ গঠনের কথা বলা হয়েছে। চিকিৎসাবর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য উপযুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দিতে পারবে কর্তৃপক্ষ। বিধি অনুসারে চিকিৎসা বর্জ্য অন্য বর্জ্যের সঙ্গে মেশানো যাবে না। উৎপাদন স্থানে ঢাকনাযুক্ত পৃথক পাত্রে রাখতে হবে। অশোধিত কোনো চিকিৎসা বর্জ্য ৪৮ ঘণ্টার বেশি মজুতও করে রাখা যাবে না। অথচ বিধিমালা অনুযায়ী তেমন কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে চিকিৎসাবর্জ্য বেশি হচ্ছে। কেননা কোটি কোটি মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহৃত হচ্ছে। করোনা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় বিপুল পরিমাণ মেডিকেল সরঞ্জামাদিও ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব চিকিৎসা বর্জ্যের যথাযথ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে না পারলে করোনা সংক্রমণে বড় ধরনের ঝুঁকি রয়েছে। তাই ২০০৮ সালের ওই বিধিমালার পুরোপুরি বাস্তবায়নে নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।
সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম সাইফুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চিকিৎসাবর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই দিকটি বিবেচনায় নিয়ে ২০০৮ সালের চিকিৎসাবর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ বিধিমালার ৩ উপবিধি অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ গঠন এবং ৭, ৮ ও ৯ বিধি অনুযায়ী বর্জ্য পৃথককরণ, পরিশোধন ও অপসারণের বিষয়ে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পরিবেশ সচিবকে ১০ আগস্টের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন