ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ বিজিবির
ভারতের দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকায় গত ১৩ জুলাই প্রকাশিত ‘বিএসএফ: বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ সাপোর্টস ক্যাটল স্মাগলিং’ শীর্ষক এক সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। আজ বিজিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ও প্রতিবাদ জানানোর কথা বলা হয়।
ভারতের ওই পত্রিকার খবরে গত ৬ জুলাই বিএসএফ সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি এস এস গুলেরিয়া স্বাক্ষরিত হিন্দি ভাষায় লিখিত এক সংবাদ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। তাতে উল্লেখ করে বলা হয়, বিএসএফ দাবি করছে, ভারত থেকে গরু পাচারে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সম্পূর্ণভাবে সমর্থন জানাচ্ছে।
বিজিবি প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রকাশিত সংবাদ ও বিবৃতিটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে ভারতীয় চোরা কারবারিদের মাধ্যমে সীমান্ত এলাকায় ভারতের মাটিতে গরু সমাগম ও নদীপথে গরু পাচারে বিএসএফের নিষ্ক্রিয়তা বা তৎপরতার অভাব নিঃসন্দেহে বিভিন্ন প্রশ্নের অবতারণা করে। ভারতীয় গরু পাচারকারীরা অধিক মুনাফা লাভের আশায় বাংলাদেশে এভাবে গরু পাচার করার কাজে অতি উৎসাহী হয়। এতে করে দেশীয় খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ প্রেক্ষিতে গরু চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবি অত্যন্ত কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে এবং বিজিবি কর্তৃক সীমান্তে গবাদিপশু চোরাচালান রোধে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সীমান্ত এলাকায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন, পুলিশ, সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সর্বস্তরের জনগণকে নিয়ে জনসচেতনতামূলক সভা আয়োজন, সীমান্তবর্তী জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাত্রিকালীন পাহারা দেওয়া ও সীমান্তে বিজিবির টহল বৃদ্ধিসহ কঠোর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। মূলত গরু চোরাচালান প্রতিরোধে বিএসএফের ব্যর্থতা ঢাকার জন্যই ভারতীয় গণমাধ্যমে সংবাদটি প্রকাশ হতে পারে।
সংবাদে আরও বলা হয়, চলতি জুলাই মাসের শেষে কোরবানির ঈদ উপলক্ষে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে গরু চোরাচালান বেড়েছে। অর্থাৎ, গরু পাচারের পেছনে ধর্মীয় কারণের উপস্থিতির দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কোরবানির ঈদে পশুর চাহিদার কথা উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে জানা গেছে, বিগত বছরে ১ কোটির সামান্য কিছু বেশি পশু কোরবানির জন্য সারা দেশে ব্যবহৃত হয়েছে। এ বছর বৈশ্বিক মহামারির কারণে ধারণা করা হচ্ছে এ সংখ্যা ১ কোটির কিছু কম হবে। আসন্ন কোরবানির ঈদের জন্য আমাদের দেশে ১ কোটি ১৮ লক্ষ ৯৭ হাজার ৫০০টি পশু মজুত রয়েছে যা প্রয়োজনের তুলনায় পর্যাপ্ত। তাই দেশীয় খামারিরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে লক্ষে বিদেশি গরু হতে নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনা হবে। বিজিবি দেশের সীমান্তে গবাদিপশু চোরাচালান রোধে কঠোর নজরদারি বাড়িয়েছে।
সংবাদে বিএসএফের সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার এর ডিআইজির বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, কোরবানি ঈদের নামে উৎসর্গ করে জবাই করার অর্থ হলো নির্যাতন করা। বিজিবি এই বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছে বলেছে, বিএসএফের এই বক্তব্য অবমাননাকর এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার শামিল।