নাসিমের পরিবার এখনই স্থানান্তরের ঝুঁকি নিতে চায় না
কয়েক দিন স্থিতিশীল থাকার পর গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরের পর সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিমের অবস্থার অবনতি হয়। রক্তচাপ ওঠানামা করতে থাকে। এরপর রাতের দিকে রক্তচাপ স্বাভাবিক হয়ে আসে। তবে অবস্থার তেমন কোনো উন্নতি নেই নাসিমের।
এর আগে অবস্থা অপরিবর্তিত থাকায় সিঙ্গাপুরে নিতে প্রস্তুতি শুরু করেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় এখনই স্থানান্তরের ঝুঁকি নিতে চাইছেন না তাঁরা। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ মেনেই এগোতে চাইছে পরিবার। তাঁর পরিবারের একটি ঘনিষ্ট সূত্র এসব নিশ্চিত করেছে।
মোহাম্মদ নাসিমের পরিবারের ঘনিষ্ঠ এক সূত্র আজ শুক্রবার এমনটাই জানিয়েছে প্রথম আলোকে। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নাসিমের ছেলে সাবেক সাংসদ তানভীর শাকিল জয় প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক দিন উন্নতি না হলেও অবনতি হয়নি। কিন্তু হুট করে অবনতি হওয়ায় দুশ্চিন্তা বেড়েছে। সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি। আজ পরিবারের ঘনিষ্ট একটি সূত্র জানায়, স্থিতিশীল থাকা অবস্থায় বিদেশে নিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তবে এখন বিদেশে নেওয়ার অবস্থা নেই।
রাজধানীর বেসরকারি একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মোহাম্মদ নাসিমকে লাইফ সাপোর্টে রেখেই চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তবে পরপর তিনবার নমুনা পরীক্ষা করে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি তাঁর।
মোহাম্মদ নাসিমের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়া গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, অবস্থার অবনতি হয়েছে। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তাঁর চিকিৎসা অব্যাহত রয়েছে।
রক্তচাপজনিত সমস্যা নিয়ে ১ জুন রাজধানীর বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি হন মোহাম্মদ নাসিম। ওই দিনই তাঁর করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। ৪ জুন তাঁর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও ৫ জুন ভোরে তিনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের সমস্যার কারণে দ্রুত অস্ত্রোপচার করে তাঁকে আইসিইউতে রাখা হয়। এরপর দুই দফায় ৭২ ঘণ্টায় করে পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত দেয় মেডিকেল বোর্ড। আজ তা শেষ হয়েছে।
এর মধ্যে সোম, মঙ্গল ও বুধবার নমুনা নিয়ে পররীক্ষা করা হলে মোহাম্মদ নাসিমের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাধিকবার নাসিমের ছেলে তানভীর শাকিল ও অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসক রাজিউল হককে ফোন করে সাবেক এই স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার বিষয়ে খোঁজখবর নেন বলে জানিয়েছে সরকারি বার্তা সংস্থা বাসস।
মোহাম্মদ নাসিম বর্তমান সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি। তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের মুখপাত্রও তিনি।
২০১৪ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান মোহাম্মদ নাসিম। এর আগে ১৯৯৬-২০০১ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের সময় একাধিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।