বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর প্রতিবাদে সিলেটে 'কফিন মিছিল'
করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়ার পর থেকেই সিলেট চিকিৎসা না পেয়ে একের পর এক মৃত্যুর অভিযোগ উঠছে। সর্বশেষ গত শুক্রবার তিনটি হাসপাতাল ঘুরে ভর্তির সুযোগ না পেয়ে ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেনের (৫৫) মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব ঘটনার প্রতিবাদে সিলেটে আজ শনিবার বিকেলে কফিন মিছিল করেছে ‘পাবলিক ভয়েস’ নামক একটি সংগঠন। একটি প্রতীকী কফিন নিয়ে মিছিলে বিভিন্ন সামাজিক, পেশাজীবী, সেবামূলক ও মানবাধিকার সংগঠনের সদস্যরাও একাত্ম হন।
নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে কফিন মিছিল শেষে প্রতিবাদ সভাও হয়। চৌহাট্টা মোড়ে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান মিফতাহ সিদ্দিকী। ‘উই আর ন্যাশনালিস্ট’ সংগঠনের সভাপতি আবু সালেহ মো. তাহেরের সঞ্চালনায় সভায় বৃহত্তর মদিনা মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক, ইসলামপুর সমাজকল্যাণ সংস্থার সভাপতি মাসুক আহমদ, উই আর ন্যাশনালিস্ট-এর সহসভাপতি দুলাল আহমদ ও সহসভাপতি সৈয়দ আমির আলী, ‘ক্ষ্যাপা তারুণ্য’-এর সহকারী সমন্বয়ক ফয়েজ আহমদ, রোটারি ক্লাব অব সিলেট অব গ্যালাক্সির সেক্রেটারি হাসান আহমদ, হ্যাল্পিং হ্যান্ডস সিলেট’-এর সহসভাপতি মইনুল আহমদ বক্তব্য দেন।
কর্মসূচির আয়োজকেরা বলছেন, করোনার উপসর্গ থাকলেই রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে না হাসপাতালগুলো। এ অবস্থায় হাসপাতালের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ঘুরে বিনা চিকিৎসায় মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে সিলেটে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর ঘটনা ক্রমে বাড়ছে উল্লেখ করে কর্মসূচির উদ্যোক্তা মিফতাহ সিদ্দিকী বলেন, ‘চিকিৎসার অভাবে মানুষের মৃত্যু সিলেটবাসী আর বরদাশত করবে না। যদি সিলেটে আর এ ধরনের ঘটনা ঘটে, তাহলে আমরা সিলেটবাসীকে সঙ্গে নিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল মালিকদের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব।’
বিনা চিকিৎসায় মারা যাওয়া একজনের স্বজন ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, ‘চিকিৎসার সুযোগ না পেয়ে সিলেটে একাধিক ঘটনা ঘটেছে। আমরা আর কাউকে বিনা চিকিৎসায় মরতে দেখতে চাই না।’
গত শুক্রবার ভোরে সিলেট নগরীর কুমারপাড়ার বাসিন্দা ইকবাল হোসেন (৫৫) শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হন। এ সময় তাঁকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ নগরীর তিনটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়েও ভর্তির সুযোগ মেলেনি বলে স্বজনদের অভিযোগ। এরপর তিনি মারা যান। সিলেট নগরীর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ইকবালের মৃত্যুর খবরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে করোনাকালে চিকিৎসাসেবা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে।
এই ব্যবসায়ীর মৃত্যুর ঘটনায় সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক হিমাংশু লাল রায় বলেন, ‘কোথাও ভুল-বোঝাবুঝি হয়েছে। আমি খবর পাওয়ার পর শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের সিসি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করেছি। সেখানে দেখা গেছে, ওই রোগীকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়নি। সম্ভবত প্রশাসনিক ভবনের ফটকে গিয়েছিলেন তাঁরা। তারপরও বিষয়টি দুঃখজনক।’