নারায়ণগঞ্জে করোনায় আক্রান্ত হয়ে নারী চিকিৎসকের মৃত্যু
করোনভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ গাইনী চিকিৎসক আমেনা বেগমের (৬৩) মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এই প্রথম নারায়ণগঞ্জে কোনো চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন।
আমেনা বেগমের ছেলে সোহাগ সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর মা গত মঙ্গলবার (১৯ মে) থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। আগে থেকে অ্যাজমার সমস্যা ছিল আমেনার। শ্বাসকষ্টের কারণে তাঁকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি রাখা হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সকালে মৃত্যু হয় তাঁর।
নারায়ণগঞ্জে চিকিৎসক আমেনা বেগমের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকেন আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আমেনা বেগমের পরিবারের অনেকেই চিকিৎসক। করোনায় আক্রান্ত নিশ্চিত হওয়ার পর প্রথমে তিনি নিজ বাড়িতেই আইসোলেশনে ছিলেন। প্রথম দিকেই শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল। সুস্থ হয়ে উঠছিলেন। কিন্তু ধীরে ধীরে পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় আমেনাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।
জেলা করোনা বিষয়ক ফোকাল পারসন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, জ্যেষ্ঠ গাইনী চিকিৎসক আমেনা বেগম করোনা পজিটিভ হন ১৪ মে। প্রথমে তিনি বাড়িতে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। পরবর্তীতে তাঁর শরীরে অক্সিজেন ধরে রাখার ক্ষমতা কমতে থাকে। ফলে তাঁকে আইসিইউতে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।
জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইমতিয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে এই প্রথম কোনো চিকিৎসকের মৃত্যু হলো। আক্রান্ত অন্য অধিকাংশ চিকিৎসক আইসোলেশনে থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
দেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। ওই দিন আক্রান্ত তিনজনকে পাওয়া যায়, যার দুজনই নারায়ণগঞ্জের। গত ৭ এপ্রিল করোনা সংক্রমণের জন্য নারায়ণগঞ্জকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ জেলা হিসেবে চিহ্নিত করে আইইডিসিআর। জেলায় এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৩৭৫ জন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৬৯৪জন।