কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যুর পর উপসর্গ নিয়ে স্ত্রীর মৃত্যু
নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদীতে কোভিড-১৯ রোগী মারা যাওয়ার ৩৪ ঘণ্টা পর তাঁর স্ত্রীও উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত সোমবার বিকেলে করোনা ‘পজিটিভ’ স্বামী শরীফ হোসেন (৫৭) মারা যান। এর এক দিন যেতে না যেতেই গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে স্ত্রী সামিউন বেগমও (৫১) মারা যান।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও কুইক রেসপন্স টিমের আহ্বায়ক মো. শাহ আলম মিয়া। মারা যাওয়া ওই দম্পতি সদর উপজেলার মাধবদী থানার নুরালাপুর গ্রামের বাসিন্দা। এই দম্পতির চার ছেলেসন্তান রয়েছে। সামিউন মাধবদী পৌরসভার মেয়র মোশাররফ হোসেন ও নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আলী হোসেনের বড় বোন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মৃত্যুর আগে গত কয়েক দিন সামিউন তাঁর স্বামীর সংস্পর্শে ছিলেন। তাঁর শরীরে জ্বর ও ঠান্ডার মতো উপসর্গ থাকায় করোনা সন্দেহে সোমবার তাঁরও নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করানো হয়েছিল। তবে ওই পরীক্ষার ফলাফলে তাঁর করোনা ‘নেগেটিভ’ আসে। তবে গত কয়েক দিন ওই দম্পতি রাজধানীর ওই হাসপাতালে আইসোলেশনে ছিলেন।
পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শরীফ ওপেন হার্ট সার্জারির রোগী ছিলেন। এ ছাড়া তিনি দীর্ঘদিন ধরে নানা রোগে ভুগছিলেন। সম্প্রতি পুরোনো রোগের চিকিৎসার জন্য তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি হলে তাঁর করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ আসে। সোমবার বিকেলে তিনি মারা যান। মৃত্যুর আগের কয়েক দিন সামিউন হাসপাতালে তাঁর সংস্পর্শে ছিলেন। শরীরে জ্বর ও ঠান্ডার মতো উপসর্গ থাকায় ওই সময় সামিউনেরও নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তবে তাঁর রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এদিকে ওই হাসপাতালেই তাঁকে আইসোলেশনে রাখা হলে তাঁর জ্বর ও ঠান্ডার সমস্যা ভালো হয়ে যায়।
সামিউনের ভাই আলী হোসেন দাবি করেন, ‘আমার বোন করোনায় সংক্রমিত ছিলেন না। অন্তত ডাক্তারি রিপোর্ট তা–ই বলছে।’ তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমার বোন গরম পানির ভাপ নাকে নেওয়ার সময় শ্বাসনালিতে সমস্যা হয়। এর জন্য তাঁর শ্বাসকষ্ট বেড়ে গিয়েছিল। এর মধ্যে তাঁর স্বামীর করোনায় মারা যাওয়ার খবর শুনে রাতে স্ট্রোক করে মারা যান।’
সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও কুইক রেসপন্স টিমের আহ্বায়ক মো. শাহ আলম মিয়া জানান, সামিউনের ডেথ সার্টিফিকেটে স্ট্রোক করে মারা যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন চিকিৎসকেরা। তারপরও ঝুঁকি এড়াতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে অল্পসংখ্যক লোকজন নিয়ে জানাজা ও দাফন করানো হয়েছে।