সুনামগঞ্জে চিকিৎসকসহ ১৪ জনের করোনা জয়
সুনামগঞ্জে করোনাভাইরাসে (কোভিড–১৯) আক্রান্ত হওয়া প্রথম চিকিৎসক এখন সুস্থ। জেলায় এ পর্যন্ত ৬৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ওই চিকিৎসকসহ ১৪ জন এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জয়ী হয়েছেন। সিভিল সার্জন মোহাম্মদ শামস উদ্দিন প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
করোনাজয়ী ওই চিকিৎসক সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা। করোনার এই সময়ে তিনি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্ব পালন করছিলেন। গত ২৪ এপ্রিল তিনি করোনায় আক্রান্ত হন। এরপর ২ মে সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত তাঁর স্ত্রীও করোনায় আক্রান্ত হন। এরপর থেকে দুজনই বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সরকারি কোয়ার্টারে কোয়ারেন্টিনে আছেন। আজ মঙ্গলবার ওই চিকিৎসকের নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদনে তিনি করোনামুক্ত উল্লেখ করা হয়। তাঁর স্ত্রীর নমুনাও দ্বিতীয় দফা পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘আমাদের এক সহকর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। বতর্মানে তিনি সুস্থ। নিজ বাসাতেই বিশ্রামে আছেন।’
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জে প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় ১২ এপ্রিল। এরপর থেকে জেলায় লকডাউন চলছে। এখন পর্যন্ত আক্রান্ত ৬৪ জনের মধ্যে চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী আছেন ১৭ জন। এই ১৭ জনের মধ্যে আজ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৫ জন। অন্যরা কোয়ারিন্টেনে আছেন। সুনামগঞ্জে ৩০ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১ হাজার ৪০৪ জনের। এর মধ্যে ফল জানা গেছে ৯৮০টির। আর ৬৪ জনের নমুনা পরীক্ষার ফল ‘পজিটিভ’ হয়েছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৪ জন।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পরিসংখ্যানবিদ মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, প্রথম দিকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য সিলেটে পাঠানো হতো। সেখান থেকে ফল আসতে সময় লাগত বেশি। পাঁচ দিন ধরে নমুনা সংগ্রহ করে সরাসরি ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে। এতে দ্রুত ফল জানা যায়। যানবাহনের সমস্যার কারণে ঢাকায় পাঠানো কিছুটা ঝামেলা হয়। সুনামগঞ্জে প্রায় প্রতিদিনই নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। সর্বশেষ সোমবার ১৬৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন মোহাম্মদ শামস উদ্দিন বলেন, ‘করোনায় আক্রান্ত আমাদের দুজন চিকিৎসকের মধ্যে একজন সুস্থ হয়েছেন। অন্যজনের দ্বিতীয় দফা নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছে। সুনামগঞ্জে আক্রান্ত বেশির ভাগ ব্যক্তিরই করোনার দৃশ্যমান উপসর্গ নেই। অনেকে নিজেকে সুস্থও দাবি করেন। কিন্তু যেহেতু পজিটিভ রেজাল্ট এসেছে, তাই তাঁদের কোয়ারেন্টিনে বা আইসোলেশনে থাকতে আমরা বাধ্য করেছি। সুনামগঞ্জে সার্বিক অবস্থা এখনো ভালো।’