অন্যের ত্রাণ পৌঁছে দেয় তারা
করোনাভাইরাসের এই সময়ে নিম্ন আয়ের অনেক মানুষের উপার্জন প্রায় শূন্যে গিয়ে ঠেকেছে। ত্রাণের জন্য বাড়ছে হাহাকার। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিগতভাবে অনেকে সাধ্যমতো ত্রাণ নিয়ে এগিয়ে এসেছেন নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য। অনেকে ত্রাণ দেওয়ার ইচ্ছা থাকলেও কীভাবে সেটা পৌঁছাবেন, তা নিয়ে মুশকিলে পড়ছেন। কারণ, ত্রাণ পৌঁছাতে বাহন ও লোকবল প্রয়োজন।
‘শপআপ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান নিজস্ব পরিবহন ও লোকবল দিয়ে এসব ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছে যথাস্থানে।
প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, প্রতিদিন গড়ে ৫০০ ত্রাণের প্যাকেট তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হয়ে পৌঁছে দিচ্ছে। এমনকি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হয়ে ত্রাণ তারা প্যাকেটও করে দিচ্ছে।
শপআপের সহপ্রতিষ্ঠাতা সিফাত সারোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, পাঁচ বছর ধরে তাঁর প্রতিষ্ঠান অনলাইনভিত্তিক বাজার প্রতিষ্ঠানগুলোর পণ্য সরবরাহে পণ্য কিনে প্যাকেট করা থেকে শুরু করে ডেলিভারিম্যান ও পরিবহন দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে সাহায্য করে থাকে। তেজগাঁওয়ে ওয়ারহাউসে প্যাকেটগুলো সরবরাহের জন্য প্রস্তুত করা হয়। তবে করোনা–পরিস্থিতিতে এই প্রথম তাঁরা ত্রাণসামগ্রী বিতরণেও এগিয়ে এসেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন থেকে ২০১২ সালে বিবিএ পাস করে ব্যবসায় যুক্ত হন সিফাত সারোয়ার।
সিফাত বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে এখন যেই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, এই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে আমরা কখনো যাইনি। অনলাইনে মোট বাজারের হার অনেক কমে গেছে। এখন যেসব বাজার প্যাকেট করে ডেলিভারি দিচ্ছি, তার সবটাই মুদিপণ্য। এই সময়ে কিছু প্রতিষ্ঠান ত্রাণ হিসেবে মুদিপণ্য বিতরণ করছে। সেই কাজও আমরা করে দিচ্ছি। এখন ৫০ শতাংশ অনলাইন বাজারের পণ্য পৌঁছানো এবং ৫০ শতাংশ ত্রাণের পণ্য পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছি আমরা।’
শপআপ জানিয়েছে, গত এক মাস যেসব প্রতিষ্ঠানের ত্রাণ তারা পৌঁছে দিয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে মিশন সেভ, ই-কর্মাস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব), অভিযাত্রিক ফাউন্ডেশন। বেশির ভাগ ত্রাণ ঢাকায় পৌঁছানো হয়েছে। ঢাকার বাইরে মুন্সিগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জে তারা ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছে। স্থানের ওপর নির্ভর করে বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, ভ্যান ও কাভার্ড ভ্যানে করে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হয়।
শপআপের সহায়তায় ত্রাণ পৌঁছানোর ব্যাপারে অভিযাত্রিক ফাউন্ডেশনের সভাপতি আহমেদ ইমতিয়াজ জামি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় আমরা ত্রাণ দিতে শপআপের ভ্যান ও লোকবলের সহায়তা নিয়েছি। ঢাকার বিভিন্ন এলাকা, যাত্রাবাড়ী ও কেরানীগঞ্জে নিম্নমধ্যবিত্ত ১ হাজার ২০০ পরিবারে ২৫ কেজির ত্রাণের ব্যাগ আমরা তাঁদের বাড়ি গিয়ে গিয়ে পৌঁছে দিয়েছি। একেকটি ব্যাগে আট কেজি চাল, দুই কেজি ডাল, পাঁচ কেজি আলু, এক কেজি লবণ, এক লিটার তেল, এক কেজি পেঁয়াজ, বিস্কুট, নুডলস ও স্যালাইনের প্যাকেট এবং মাস্ক ছিল।’