করোনায় চট্টগ্রাম বন্দরে প্রথম মৃত্যু

চট্টগ্রাম বন্দর। প্রথম আলো ফাইল ছবি
চট্টগ্রাম বন্দর। প্রথম আলো ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরের মারা যাওয়া কর্মচারী করোনা আক্রান্ত ছিলেন। গত মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই কর্মচারী মারা যান। এরপরই নমুনা নেওয়া হয়। বুধবার রাতে তাঁর করোনা শনাক্ত হয়।

আজ বৃহস্পতিবার বন্দর কর্মচারীদের মাঝে এই খবর ছড়িয়ে পড়লে আতংকিত হয়ে পড়েন বন্দরের 'ওয়ান স্টপ শাখার' কর্মচারীরা। তাঁরা স্বাস্থ্যসুরক্ষার দাবিতে ওই শাখায় প্রায় তিন ঘণ্টা কাজ বন্ধ রাখেন। পরে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশ্বাসে কাজে যোগ দেন কর্মচারীরা।

মারা যাওয়া বন্দর কর্মচারী আবদুল হালিম (৫৬) বন্দরের ওয়ানস্টপ শাখায় বিল ক্লার্ক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি সর্বশেষ শনিবার অফিস করেন। তার সংস্পর্শে আসা বন্দরের আট কর্মচারীকে বৃহস্পতিবার কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। নিহত আবদুল হালিমের বাড়ি ঝালকাঠিতে। তিনি চট্টগ্রাম হালিশহর আবাসিক এলাকার এইচ ব্লকে থাকেন। তার স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে।

মৃত কর্মচারী ছেলে আজমল হাসিব প্রথম আলোকে বলেন, ১ মে তাঁর বাবার শরীরে জ্বর আসে। পরদিন তিনি অফিস করেন। রোববার অসুস্থবোধ করলে বন্দর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। সেখানে চিকিৎসকেরা ওষুধ দেন। তারা করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত হাসপাতালে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। এরপর সোমবার তারা করোনা পরীক্ষা করানোর চেষ্টা চালান। তিনদিন পর নমুনা সংগ্রহ করা হবে বলে তাঁদের জানানো হয়।

হাসিব জানান, মঙ্গলবার রাতে তার বাবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান তারা। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তিনি জানান, চিকিৎসকেরা প্রথমে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে বলে জানায়। এরপরও তাদের অনুরোধে নমুনা নেওয়া হয়। বুধবার রাতে সিভিল সার্জন অফিস থেকে ফোনে করোনা পরীক্ষার ফল পজিটিভি এসেছে বলে জানানো হয়।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি প্রথম আলোকে বলেন, নমুনা পরীক্ষায় আবদুল হালিমের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে।

মারা যাওয়ার পর করোনা নিশ্চিত হওয়ার খবর নিহতের সহকর্মীরা জানতে পারেন আজ বৃহস্পতিবার। এরপরই ওয়ান স্টপ শাখার কর্মচারীরা সুরক্ষার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। বন্দরের সংরক্ষিত এলাকায় অবস্থিত এই শাখায় প্রায় ১০০ জনের মতো কর্মচারী কাজ করেন। বন্দর থেকে পণ্য খালাসের ছাড়পত্র, বিল পরিশোধসহ যাবতীয় কাজ এই শাখায় করা হয়। এই শাখায় পণ্য খালাসে যুক্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী বা সেবা গ্রহীতাদের ভিড় সবসময় লেগে থাকে। ফলে ঝুঁকিও বেশি।

বিক্ষোভ চলাকালীন বন্দর পর্ষদের সদস্য জাফর আলম ঘটনাস্থলে যান। সব পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপরই দুপুর একটার দিকে কাজ শুরু হয়।

বন্দরের পর্ষদ সদস্য জাফর আলম প্রথম আলোকে বলেন, সেবাগ্রহীতাদের ভিড় কমাতে ওয়ান স্টপ সেন্টারে লাইনের সংখ্যা বাড়ানো হবে। বন্দরের ফটকগুলোতে জীবাণুনাশকসহ স্বাস্থ্যসুরক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। এখন ওয়ান স্টপেও সব ধরনের ব্যবস্থা রাখা হবে।