নেত্রকোনায় চিকিৎসকসহ ৮ জন নতুন আক্রান্ত
নেত্রকোনায় নতুন করে এক চিকিৎসকসহ আটজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট ৬৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৪ জন সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন।
নতুন আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে খালিয়াজুরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী, কেন্দুয়ার একজন স্বাস্থ্যকর্মী, মোহনগঞ্জের দুজন, আটপাড়ার একজন ও মদনের দুজন।
জেলা সিভিল সার্জন মো. তাজুল ইসলাম জানান, নেত্রকোনায় গত ২ এপিল থেকে আজ বুধবার পর্যন্ত ১ হাজার ৩৮৩টি নমুনা পরীক্ষার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেলের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ল্যাবে পাঠানো হয়। এর মধ্যে প্রাপ্ত ১ হাজার ৯২টির প্রতিবেদনে ৬৬ জনের শরীরে কোভিড-১৯ ধরা পড়ে। তাঁদের মধ্যে পাঁচ বছরের এক শিশুসহ ২১ জন নারী রয়েছেন। জেলায় প্রথম করোনায় আক্রান্ত ধরা পড়ে গত ১০ এপ্রিল। বর্তমানে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে খালিয়াজুরীতে ৬ জন, মদনে ৬, কলমাকান্দায় ৪, সদর উপজেলায় ৪, মোহনগঞ্জে ১২, বারহাট্টায় ১০, আটপাড়ায় ১২, কেন্দুয়ায় ৫ ও পূর্বধলায় ৭ জন রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৩৩ জনই পোশাককর্মী। অন্যদের মধ্যে ৫ জন চিকিৎসক এবং ১৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। এ ছাড়া অন্যদের মধ্যে এনজিও কর্মী, ওষুধ প্রতিনিধি, রাজমিস্ত্রির সহযোগী, গৃহিণী ও কৃষক রয়েছেন। আক্রান্ত ৬৬ জনের মধ্যে ৪৫ জনই বাইরের জেলা থেকে এসেছেন। সবচেয়ে বেশি নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর থেকে এসেছেন।
জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম জানান, আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে চারজনকে প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। অন্যরা নিজ নিজ বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি জানান, জেলায় সরকারি ও বেসরকারি মিলে মোট ৩৩টি চিকিৎসাকেন্দ্রের মধ্যে ৭৫২টি শয্যা রয়েছে। এর মধ্যে কোভিড-১৯ চিকিৎসার জন্য সরকারিভাবে ১৪৫টি ও বেসরকারিভাবে ২৩টিসহ মোট ১৬৮টি শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জরুরি চিকিৎসায় স্থানান্তরের জন্য সার্বক্ষণিক চালকসহ একটি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা আছে। ৮৩ জন চিকিৎসক ও ৮৩ জন নার্স করোনায় আক্রান্ত রোগীদের সেবায় কাজ করে যাচ্ছেন। সেবাদানে নিয়োজিতদের সুরক্ষার জন্য ১০ হাজার ৭৬৯টি পিপিই পাওয়া গেছে। তার মধ্যে ৮ হাজার ৭২০টি বিতরণ করা হয়। নিজেদের প্রস্তুত করা ২৮ হাজার মাস্ক ও ৬ হাজার ১৩০টি ২৫০ মিলিগ্রামের বোতলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করা হয়।
এ ছাড়া তিনি জানান, এ পর্যন্ত ৯৩ হাজার ১০০টি পরিবারের মধ্যে ৯৩১ মেট্রিক টন চাল এবং ১০ হাজার ৪৯২টি পরিবারের মধ্যে ৫২ লাখ ৪৬ হাজার নগদ টাকা বিতরণ করা হয়। সরকারি জরুরি সেবা ৩৩৩ থেকে ১ হাজার ৯২১টি কল পেয়ে সমপরিমাণ সুবিধাভোগীদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। বর্তমানে জেলা প্রশাসকের জিআর মজুত রয়েছে ৮১৬ মেট্রিক টন চাল এবং ২৫ লাখ ৯৩ হাজার ৫০০ টাকা।