টিফিনের জমানো টাকা ত্রাণ তহবিলে
সপ্তম শ্রেণির ছাত্র মওদুদ হাসান। সে স্কুলে যাওয়ার সময় মা-বাবা তার হাতে টিফিনের জন্য টাকা দিত। দীর্ঘদিন ধরে টিফিনের টাকা থেকে কিছু জমিয়ে রেখেছিল সে। সেই টাকা থেকে ৫ হাজার ১ টাকা উপজেলা প্রশাসনের ত্রাণ তহবিলে জমা দিয়েছে সে। আজ সোমবার জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকিউল ইসলামের কাছে মওদুদ ওই টাকা হস্তান্তর করেছে।
এ সময় আক্কেলপুর মজিবুর রহমান (এমআর) ডিগ্রি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোকছেদ আলী, আক্কেলপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ওমপ্রকাশ আগরওয়ালা, সাপ্তাহিক সত্যের পথে পত্রিকার সম্পাদক সরদার নুরুন্নবী আরিফ সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
মওদুদ হাসান উপজেলার ভানুরকান্দা নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। সে আক্কেলপুর পৌর এলাকার চক্রপাড়া মহল্লার মালয়েশিয়াপ্রবাসী দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। আজ সন্ধ্যায় ইউএনও জাকিউল ইসলাম ‘উপজেলা প্রশাসন আক্কেলপুর’ নামে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পেজে খুদে এই শিক্ষার্থীর ত্রাণ তহবিলে টাকা হস্তান্তরের একটি ছবি ও লেখা পোস্ট করেছেন।
ফেসবুকে দেওয়া ছবিতে দেখা গেছে, ইউএনও জাকিউল ইসলামের হাতে এই খুদে শিক্ষার্থী টাকা হস্তান্তর করছে। ইউএনও ওই ছবির নিচে পোস্টে লিখেছেন, ‘ভানুরকান্দা নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র মওদুদ তার জমানো টিফিনের ৫০০১ টাকা করোনাকালীন দুর্যোগের শিকার দুস্থদের সাহায্যার্থে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ত্রাণ তহবিলে দান করে। মানবিকতা ও মনুষ্যত্বের যে শিক্ষা তার পরিবার ও প্রতিষ্ঠান তাকে দিয়েছে, সেই জন্য তাদের প্রতি অকৃত্রিম শ্রদ্ধা। মওদুদকে দোয়া করি, সারা জীবন তোমার প্রাতিষ্ঠানিক এবং ব্যক্তিগত সকল সফলতা ডিঙিয়ে যাক তোমার মানবিকতা। তুমি বড় হয়ে আর যা–ই হও, এ রকম মানুষ থেকো সারা জীবন।’
পোস্টে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। রাসেল হোসেন নামে এক ব্যক্তি বলেছেন, ‘এই ছোট্ট মাসুম বাচ্চার কাছ থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া দরকার।’
যোগাযোগ করা হলে মওদুদ হাসান বলে, ‘আমি টিফিনের টাকা জমিয়ে রেখেছিলাম। সেই টাকা ত্রাণ তহবিলে জমা দেওয়ার ইচ্ছার কথা আমার মা-বাবাকে জানাই। তাঁরা ত্রাণ তহবিলে জমা দেওয়ার কথা শুনে খুশি হন। আজকে ইউএনও স্যারের কাছে গিয়ে টিফিনের টাকা জমা দিয়েছি।’
ইউএনও জাকিউল ইসলাম বলেন, সপ্তম শ্রেণির ছাত্র মওদুদ টিফিনের টাকা জমিয়ে করোনাকালীন দুর্যোগের স্থানীয় ত্রাণ তহবিলে ৫০০১ টাকা জমা দিয়েছে। এই টাকায় ত্রাণসামগ্রী কিনে দুস্থদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। খুদে এই শিক্ষার্থীর মানবিকতা সত্যিই প্রশংসনীয়।