সুনামগঞ্জে নতুন ১১জন শনাক্ত, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ

সুনামগঞ্জে নতুন করে ১১জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন চারজন স্বাস্থ্যকর্মী, একজন ব্যাংক কর্মকর্তা। অবস্থায় মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখার কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ শামস উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সুনামগঞ্জে এ নিয়ে করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হলেন ২৬জন। এর মধ্যে একজন সুস্থ হয়েছেন। বর্তমানে ১৫জন আইসোলেশনে আছেন। জেলায় এ পর্যন্ত ৬৪৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ৩৪৬জনের নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন এসেছে।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, নতুন করে শনাক্ত হওয়া ১১ জনের মধ্যে চারজন বিশ্বম্ভরপুর, তিনজন দোয়ারাবাজার, দুজন দক্ষিণ সুনামগঞ্জ এবং একজন করে সদর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার।

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ বলেন, তাঁর উপজেলায় শনাক্ত হওয়া চারজনের মধ্যে তিনজনই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মী। অপর ব্যক্তি (১৮) গাজীপুরে শ্রমিকের কাজ করতেন। স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে হাসপাতালের কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে পার্শ্ববর্তী একটি ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে মানুষজনের প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়া হবে।

দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পবিরবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, তাঁর উপজেলায় শনাক্ত হওয়া তিনজনের বয়স আনুমানিক ২২-২৩ বছর। এঁরা কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বিভিন্ন হোটেল ও দোকানে কাজ করতেন। তিন দিন আগে তাঁরা বাড়িতে ফেরেন। তিনজনেরই সামান্য সর্দি, জ্বর আছে।

দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন শরিফী বলেন, তাঁর উপজেলায় শনাক্ত হওয়া দুজনের মধ্যে একজনের বয়স ৫৫; অন্যজন শিক্ষার্থী (১৬)। দুজন সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা। ৫৫ বছর বয়সী ব্যক্তির এক মেয়ের দেহে ২৩ এপ্রিল করোনা শনাক্ত হয়।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, সদর উপজেলায় শনাক্ত হওয়ার ব্যক্তি সর্দি, জ্বরে আক্রান্ত। তিনি নিজে থেকেই স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ২৩ এপ্রিল তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তিনি একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের সুনামগঞ্জ পৌর শহর শাখায় চাকরি করেন। তিনি নিজে থেকেই হোম কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যাংকের ওই শাখার কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এ ছাড়া জগন্নাথপুরে আক্রান্ত হওয়া ব্যক্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মী। তিনি করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহের কাজ করে আসছিলেন। সেখান থেকেই আক্রান্ত হয়েছেন বলে স্বাস্থ্য বিভাগের ধারণা।

সিভিল সার্জন মোহাম্মদ শামস উদ্দিন বলে, 'আক্রান্ত অনেকেরই করোনার উপসর্গ নেই। তাঁরা নিজ নিজ বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে আছেন। আমরা সবার সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছি। যদি কাউকে আইসোলেশনে আনতে হয় সেটি করা হবে।'