মেয়রের হাতে টাকাসহ মাটির ব্যাংক তুলে দিল শিশুটি
করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিম্ন আয়ের মানুষকে খাদ্যসহায়তা দিতে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের গঠিত ত্রাণ তহবিলের জন্য মেয়রের হাতে মাটির ব্যাংকে জমানো টাকা তুলে দিয়েছে একটি শিশু। গতকাল রোববার বিকেলে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান শিশুটির মাথায় হাত রেখে দোয়া করেন এবং মাটির ব্যাংকটি নিজের টেবিলে রেখে দেন।
শিশুটি চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের রামচন্দ্রপুর কালুর মিস্ত্রির মোড়ের বাসিন্দা আরাফাত রুবেল ও আলিয়া রুপি দম্পতির সন্তান। তার নাম রাফসান।
শিশু রাফসান জানায়, সে দুই বছর ধরে তাঁর মাটির ব্যাংকে টাকা জমায়। মা–বাবা, নানা-নানি, খালাসহ অন্য আত্মীয়স্বজন বিভিন্ন দিবস ও ঈদ উপলক্ষে যে অর্থ দেয়, তার মধ্যে কিছু অর্থ সে তার মাটির ব্যাংকে জমা রাখে। করোনা পরিস্থিতিতে গরিব মানুষ খাবার পাচ্ছেন না, টিভিতে খবর দেখে অসহায় মানুষদের খাবারের জন্য এই অর্থ দিয়েছে।
রাফসানের বাবা আরাফাত রুবেল বলেন, মেয়র মহোদয় রাজশাহীর অসহায় মানুষের ঘরে ঘরে খাদ্যসহায়তা দিতে আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সমাজের সামর্থ্যবান মানুষদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। বিষয়টি পরিবারে আলোচনা করার সময় রাফসান জানায়, তার মাটির ব্যাংকে জমানো সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা আছে। এই টাকা সে দিতে চায়। ছেলের উৎসাহ দেখে তিনি তাকে নিয়ে নগর ভবনে হাজির হন।
মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘অসহায় মানুষদের জন্য আমি সমাজের সামর্থ্যবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানানোর পর অনেকেই এগিয়ে আসছেন। আজ ছোট্ট শিশু রাফসানের মাটির ব্যাংক নিয়ে হাজির হওয়ার ঘটনাটি আমার হৃদয় ছুঁয়ে গেছে, আবেগ্লাপুত করেছে। এটি মানবিকতার এক দৃষ্টান্ত ও বার্তা।’
মেয়র আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য খাদ্যসহায়তা প্রদান করছেন। রাজশাহীতে বিত্তবানদের সহযোগিতায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে মানুষকে সহায়তা করছি। সংকটময় পরিস্থিতিতে আমরা সবাই যদি নিজ নিজ জায়গা থেকে এগিয়ে আসি, তবে কেউ খাদ্যসহায়তার আওতার বাইরে থাকবে না।’
সরকারি সহায়তা ও সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের উদ্যোগে রাজশাহীতে প্রথম পর্যায়ে ২০ হাজার পরিবার এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও প্রায় ২৫ হাজার পরিবারকে চাল, ডাল ও আলু প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে ৩০টি ওয়ার্ডে ২১ হাজার পরিবারের জন্য ২১০ টন সরকারি চাল বিতরণ কার্যক্রম চলছে। এই খাদ্যসহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে ১৪ এপ্রিল এক বিবৃতিতে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ত্রাণ তহবিলে নগদ অর্থ অথবা নিত্যপ্রয়োজনী পণ্য প্রদানে মহানগরবাসীকে আহ্বান জানান মেয়র।