স্বাস্থ্যসচিবের সমালোচনা করায় চিকিৎসককে শোকজ
এন-৯৫ মাস্ক ও পিপিই না পেয়ে ফেসবুকে স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা করে স্ট্যাটাস দেওয়ায় নোয়াখালীর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের একজন চিকিৎসকের কাছে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে। ওই চিকিৎসকের নাম আবু তাহের। তিনি ওই হাসপাতালের সহকারী সার্জন (অ্যানেসথেটিস্ট) হিসেবে কর্মরত।
আজ শনিবার হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক পত্রে ওই কৈফিয়ত তলব করা হয়। যাতে কেন তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হবে না, তিন দিনের মধ্যে লিখিতভাবে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
১৬ এপ্রিল চিকিৎসক আবু তাহের নিজের ফেসবুকে লেখেন, ‘রোগীর সবচেয়ে কাছে থেকে আমি চিকিৎসা দেই। গত এক মাসে প্রতিদিন হাসপাতালে গিয়েছি। এখন পর্যন্ত আমিসহ আমার বিভাগের কেউ একটিও এন-৯৫ মাস্ক পাইনি। তাহলে স্বাস্থ্যসচিব মিথ্যাচার কেন করলেন, উনি এন-৯৫ মাস্ক দিচ্ছেন? তাও প্রধানমন্ত্রীকে মিথ্যা বলতেছেন? এই মিথ্যাচারের শাস্তি কী হবে? গত এক মাসে আমার বিভাগের আটজনের জন্য দুইটি পিপিই দেওয়া হয়েছে। অথচ এই সময়ে ১৫০টির বেশি অপারেশন আমি করেছি।’
জানতে চাইলে চিকিৎসক আবু তাহের আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, দুপুরে তিনি কৈফিয়তের চিঠিটি হাতে পেয়েছেন। তিনি ফেসবুকে দেওয়া বক্তব্যে অনড় রয়েছেন উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি যা লিখেছি, এক বিন্দুও মিথ্যা লিখিনি। হাসপাতালে যদি পিপিই মজুতই থাকে, তাহলে আমাদের বিভাগে দেওয়া হয়নি কেন? তা ছাড়া এন-৯৫ মাস্ক তো এই হাসপাতালের কেউই পাননি।’
আবু তাহের বলেন, একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে নিজের মত প্রকাশ করার অধিকার তাঁর আছে। সেই অধিকার থেকে তিনি নিজের মতামত প্রকাশ করেছেন। এখন সত্য লেখার কারণে যদি কোনো শাস্তি পেতে হয়, সেটি তিনি মাথা পেতে নিতে রাজি আছেন। তিনি আরও বলেন, ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার পর আজ সকালে তাঁর কাছে তত্ত্বাবধায়ক ৫০টি সার্জিক্যাল মাস্ক পাঠিয়েছেন। অথচ এত দিন নিজের বেতনের টাকায় মাস্ক কিনে ব্যবহার করে আসছেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য আজ সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরীর মুঠোফোনে ফোন দিয়ে তা বন্ধ পাওয়া যায়।