সুনামগঞ্জে আরেক নারীর করোনা শনাক্ত, চিকিৎসক-নার্সসহ কোয়ারেন্টিনে ৫
সুনামগঞ্জের আরেক নারীর শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। প্রসূতি ওই নারী সুনামগঞ্জ থেকে সিলেটে গিয়ে এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখানে সন্তান প্রসবের পর করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেয়। পরে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার পর জানা যায়, তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
আজ সোমবার সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন মোহাম্মদ শামস উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গতকাল রোববার সুনামগঞ্জে প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। তিনি বর্তমানে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে আছেন। তিনিও নারী। গতকাল বিকেলে সুনামগঞ্জ জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করে প্রশাসন।
এদিকে নতুন আক্রান্ত হওয়া ওই নারী প্রথমে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন। তাঁর সংস্পর্শে আসা সদর হাসপাতালের একজন গাইনি চিকিৎসক ও চারজন নার্সের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তাঁদের হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে।
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ওই নারী (২৫) গত বুধবার প্রসবব্যথা নিয়ে সদর হাসপাতালে আসেন। একজন গাইনি চিকিৎসক দেখে জানান, তাঁর সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার লাগবে। কিন্তু রোগীর স্বজনেরা নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত জোগাড় করতে পারছিলেন না। পরে তাঁর অবস্থা অবনতি হওয়ায় সিলেটে পাঠানো হয়। এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বৃহস্পতিবার রাতে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেন ওই নারী। পরদিন শুক্রবার তাঁর মধ্যে জ্বর, কাশি শুরু হয়। গতকাল তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। আজ জানা গেছে, ওই নারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত।
গ্রামের একাধিক বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, ওই নারীর স্বামী নারায়ণগঞ্জ জেলায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। গত সপ্তাহে তিনি গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন। তাই স্বামীর মাধ্যমেই ওই নারী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে সবার ধারণা।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন মোহাম্মদ শামস উদ্দিন বলেন, তাঁরা বিষয়টি প্রশাসনের লোকজনকে অবগত করেছেন। তাঁরা ওই নারীর স্বামীসহ বাড়ির ও আশপাশের লোকজনকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন করার ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছেন।
আরএমও রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালের যাঁরা ওই নারীর সংস্পর্শে গিয়েছিলেন, এমন একজন চিকিৎসক ও চারজন নার্সকে হোস কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ওই নারীর পরিবারের লোকজন এ বিষয়ে আমাদের কোনো কিছু বলেনি। এ কারণে আমরা সমস্যায় পড়েছি।’