তাপমাত্রার সঙ্গে করোনা সংক্রমণের সম্পর্ক না-ও থাকতে পারে
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। অনেকে মনে করছেন, শীতকালীন অন্যান্য ফ্লুর মতো পরিবেশের তাপমাত্রা বাড়লে সংক্রমণও কমে আসতে পারে। কিন্তু এ নিয়ে প্রকাশিত বিভিন্ন গবেষণা মূল্যায়ন করে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, নতুন এই ভাইরাসের সংক্রমণের সঙ্গে ঋতুচক্রের সম্পর্ক না–ও থাকতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড মেডিসিনের (এনএএসইএম) ওয়েবসাইটে গত মঙ্গলবার বিশেষজ্ঞদের একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। এতে এনএএসইএমের স্ট্যান্ডিং কমিটি অন এমার্জিং ইনফেকশাস ডিজিজ অ্যান্ড টোয়েন্টিফার্স্ট সেঞ্চুরি হেলথ থ্রেটস বলেছে, বিভিন্ন গবেষণায় দাবি করা হচ্ছে, অপেক্ষাকৃত বেশি তাপমাত্রা ও আর্দ্রতায় করোনাভাইরাসের টিকে থাকার সম্ভাবনা কম। কিন্তু এ ধরনের দাবির ওপর এখনই অতিমাত্রায় ভরসা করা উচিত নয়। কারণ, এসব গবেষণায় যেসব তথ্য–উপাত্ত হাজির করা হচ্ছে, সেগুলোর মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে এবং এসব তথ্যও প্রশ্নবিদ্ধ।
এর আগে চীনের বিজ্ঞানীদের এক গবেষণায় দাবি করা হয়, ৬৭ থেকে ৮৫ শতাংশ আর্দ্রতায় প্রতি ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে দৈনিক রোগী শনাক্ত হওয়ার হার ৩৬ শতাংশ থেকে ৫৭ শতাংশ কমে আসে। আর গড় তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি থেকে ৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে আর্দ্রতা প্রতি ১ শতাংশ বৃদ্ধিতে দৈনিক রোগী শনাক্ত হওয়ার হার ১১ শতাংশ থেকে ২২ শতাংশ কমে। তবে চীনের মূল ভূখণ্ডে একেক এলাকার ক্ষেত্রে এ তথ্যের ভিন্নতা রয়েছে।
গবেষণা নিবন্ধে বলা হয়, অপেক্ষাকৃত উষ্ণ তাপমাত্রা নতুন করোনাভাইরাসের জন্য সহায়ক না বলেও যদি ধরে নেওয়া হয়, তারপরও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া থেমে থাকবে না। অস্ট্রেলিয়া ও ইরানে এখন গ্রীষ্মকাল। কিন্তু এ দেশগুলোয় ভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত ছড়াচ্ছে। নিবন্ধে আরও বলা হয়, এর আগে সংক্রমণ ছড়ানো সার্স–করোনাভাইরাস ও মার্স–করোনাভাইরাসের সঙ্গেও ঋতুচক্রের সম্পর্ক ছিল না। এমনকি এর আগে বৈশ্বিক মহামারি হয়ে ওঠা অন্য কোনো ফ্লুও ঋতু পরিবর্তন বা পরিবেশের তাপমাত্রার হ্রাস–বৃদ্ধির সঙ্গে স্তিমিত হয়নি।