নরসিংদীর প্রথম করোনা-আক্রান্ত শনাক্ত
নরসিংদীতে এই প্রথম কোনো ব্যক্তিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। আজ সোমবার সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়ি নরসিংদীর পলাশের ডাঙ্গা ইউনিয়নে। তিনি নারায়ণগঞ্জের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।
নারায়ণগঞ্জের ওই পোশাক কারখানায় কর্মরত পাঁচজন ব্যক্তি মিলে একটি বাসায় বসবাস করতেন। তাঁদের মধ্যে এক ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আছেন এমন সন্দেহে ১ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ থেকে নরসিংদীতে ফেরেন ওই ব্যক্তি। এখন জানা যাচ্ছে, নারায়ণগঞ্জের ওই ব্যক্তিও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। তিনি নিজেও পাঁচ–ছয় দিন ধরে জ্বর, ঠান্ডাসহ করোনার উপসর্গ টের পাচ্ছিলেন। সেই সন্দেহ থেকে নিজেই নমুনা পরীক্ষার উদ্যোগ নেন।
আক্রান্ত ব্যক্তির স্বজনেরা জানান, গত কয়েক দিনের জ্বর ও ঠান্ডায় সন্দেহ তৈরি হলে তিনি নিজেই প্রথমে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে যান। সেখানকার চিকিৎসকেরা তাঁকে ওষুধপথ্য দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। পরদিন নিজেই নমুনা পরীক্ষা করাতে আইইডিসিআরে গেলে তাঁকে পরীক্ষা না করিয়েই ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরে সর্বশেষ গত রোববার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষা করে আসেন। এই নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে তাঁকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে নিশ্চিত করা হয়।
এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ওই ব্যক্তির বাড়িসহ এলাকাটি লকডাউন করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। আজ রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই বাড়িতে উপস্থিত হয়ে লকডাউনের ঘোষণা দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানা আলী। ওই বাড়ির পাশে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, যাতে কেউ ওই বাড়ির আশপাশে যেতে না পারে। পাশাপাশি ওই পরিবারের সব সদস্যকে কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে পলাশের ওই আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়িতে যান সিভিল সার্জন মো. ইব্রাহীম, নরসিংদীর করোনা প্রতিরোধ জরুরি সেলের প্রধান ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ইমরুল কায়েস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার্স) বেলাল আহমেদ, ইউএনও ফারহানা আলী, পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. নাসির উদ্দিন প্রমুখ।
স্থানীয় লোকজন বলছেন, পলাশের ওই বাড়িতে মা-বাবা, ভাই, স্ত্রী ও তিনটি ছোট সন্তান নিয়ে বসবাস করেন তিনি। ওই ব্যক্তির করোনা পজিটিভ হওয়ার খবরে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। তাঁরা বলছেন, যে ব্যক্তি নিজেই পরীক্ষার জন্য গেছেন, তাঁকে অন্তত এক দিনের জন্য হাসপাতালে ভর্তি রাখলে তো এলাকায় এই আতঙ্ক ছড়াত না।
এ ব্যাপারে নরসিংদীর সিভিল সার্জন মো. ইব্রাহীম জানান, আক্রান্ত ওই ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জ থেকে সহকর্মীর মাধ্যমে করোনাভাইরাস বহন করে নিয়ে এসেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাড়িটি লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পরিবারটির সব সদস্যকে বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হচ্ছে।