হিজড়ারা দেখিয়েছেন কীভাবে ত্রাণ নিতে হয়
যেখানে ত্রাণের কথা বললে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় সাধারণ মানুষের মধ্যে, সেখানে ত্রাণ নিতে এসে শৃঙ্খলার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন সুবিধাবঞ্চিত তৃতীয় লিঙ্গের হিজড়া জনগোষ্ঠীর সদস্যরা। করোনাভাইরাসের কারণে আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়া এই সম্প্রদায়ের ১৮৮ জন সদস্যের হাতে আজ বৃহস্পতিবার ত্রাণসামগ্রী তুলে দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
নগরের পাহাড়তলির একটি কমিউনিটি সেন্টারে এই ত্রাণ বিতরণ করা হয়। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এহসান মুরাদ এই ত্রাণ বিতরণ করেন। তাঁরা হিজড়াদের নেতা ফাল্গুনীকে শৃঙ্খলা মেনে ত্রাণ নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান। তখন ফাল্গুনী হিজড়া তাঁদের আশ্বস্ত করেন, তাঁরা শৃঙ্খলা মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ত্রাণ নেবেন।
কমিউনিটি সেন্টারের মাঠে প্রত্যেক হিজড়া নির্ধারিত দূরত্ব মেনে রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে যান। ত্রাণ বিতরণের নির্ধারিত সময় বেলা ১১টায়। কিন্তু বিতরণ করতে আধঘণ্টা দেরি হলেও তাঁদের শৃঙ্খলায় কোনো চ্যুতি ঘটেনি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কর্মচারীরা ত্রাণের ব্যাগগুলো গাড়ি থেকে নামিয়ে সুনির্দিষ্ট স্থানে সারিবদ্ধভাবে রাখেন। এরপর একে একে হিজড়া জনগোষ্ঠীর ১৮৮ জন সদস্য ত্রাণ নিয়ে যান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এ জেড এম শরীফ হোসেন। ত্রাণ বিতরণে সহযোগিতা করেন পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘করোনাভাইরাসের এই দুর্যোগে ত্রাণ বিতরণ প্রতিদিনই হচ্ছে। ত্রাণ দিতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ নানা বিষয়ে। কিন্তু আজ হিজড়া সম্প্রদায় চোখে আঙুল দিয়ে শৃঙ্খলা কাকে বলে দেখিয়ে দিল। এ কৃতিত্ব প্রশাসনের নয়, এটা হিজড়াদের কৃতিত্ব। শৃঙ্খলার নতুন নজির স্থাপন করেছে তারা।’
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ত্রাণের প্রতিটি ব্যাগে ছিল ১০ কেজি চাল ও ২ কেজি ডাল।