শরীরে করোনার লক্ষণ আছে শুনেই পালালেন প্রবাসী
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় কাতারপ্রবাসী (৩০) এক যুবক তাঁর শরীরে করোনাভাইরাসের লক্ষণ আছে শুনে চিকিৎসা না নিয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। গতকাল বুধবার বিকেলে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে পালিয়ে যান। পরে আজ বৃহস্পতিবার তাঁর বাড়ির ঠিকানায় গিয়ে তাঁকে পাওয়ার পর সেখানেই ‘কোয়ারেন্টিনে’ রাখা হয়।
কাতারপ্রবাসী ওই যুবক ৩ মার্চ কাতার থেকে বাংলাদেশে আসেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যায় জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে কাতারপ্রবাসী যুবক নাসিরনগর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক এ বি এম মুসা চৌধুরী প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। ওই যুবক তখন হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তির জন্য চারতলায় যান। কিছুক্ষণ পরই তিনি সেখান থেকে নেমে আবার জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে যান। চিকিৎসক তাঁকে জানান, তাঁর শরীরের লক্ষণগুলো দেখে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি সংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটা শোনার পর কাতারপ্রবাসী ওই যুবক হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান।
জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এ বি এম মুছা চৌধুরী বলেন, ‘ওই প্রবাসীর শরীরের তাপমাত্রা ১০০ থেকে ১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছিল। তিনি নিউমোনিয়া, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট-সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছেন। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিয়েছিলাম। করোনাভাইরাসের লক্ষণ থাকায় তাঁর পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে শুনে ভয়ে তিনি হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান।’
নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অভিজিৎ রায় আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, সিভিল সার্জন কার্যালয় ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই যুবকের নাম-ঠিকানা জানিয়েছে। তাঁকে খুঁজে বের করতে সেই ঠিকানায় লোক পাঠানো হয়েছে।
আজ দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন জানান, পালিয়ে যাওয়া যুবককে তাঁর বাড়ির ঠিকানায় পাওয়া গেছে। পরে তাঁকে নিজের বাড়িতেই ‘কোয়ারেন্টিনে’ রাখা হয়েছে।
এদিকে গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক চিঠিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা পুলিশকে জানিয়েছে, ১ মার্চ থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন দেশ থেকে ৯ হাজার ২০৮ জন প্রবাসী ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এসেছেন। তাদের মধ্যে নাসিরনগরে এই সংখ্যা ২২৩।