সাংবাদিক শফিকুলকে ফেরত চায় পরিবার
নিখোঁজ সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলকে সুস্থ অবস্থায় ফিরে পাওয়ার দাবি জানিয়েছে তাঁর পরিবার। আজ শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তাঁর স্ত্রী ও ছেলে এ দাবি জানান। শফিকুল ঢাকা থেকে প্রকাশিত পক্ষকাল ম্যাগাজিনের সম্পাদক।
শফিকুলের স্ত্রী জুলিয়া ফেরদৌসী বলেন, শফিকুল গত মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে হাতিরপুলে তাঁর পত্রিকার কার্যালয়ে যাওয়ার কথা বলে পুরান ঢাকার বকশি বাজারের বাসা থেকে বের হন। এরপর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁর দুটি মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি। একপর্যায়ে এক ব্যক্তি শফিকুলের ফেসবুকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার আসামি হিসেবে শফিকুলসহ কিছু ব্যক্তির তালিকা পাঠান। বিষয়টি জানতে পেরে পরদিন গত বুধবার তিনি এ ঘটনায় চকবাজার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। তিনি আরও বলেন, শফিকুলকে নিয়ে তাঁরা দুশ্চিন্তা ও উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। বর্তমান প্রযুক্তির যুগে তাঁকে খুঁজে বের করা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে কোনো বিষয় নয়। শফিকুলের সঙ্গে কারও কোনো বিরোধ ছিল না বলে জানান তাঁর স্ত্রী।
শফিকুলের ছেলে মনোরম পলক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। তিনি বাবাকে খুঁজে বের করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সহযোগিতা কামনা করছেন। একই সঙ্গে বাবার নিখোঁজের বিষয়ে সহকর্মী, সব গণমাধ্যমকর্মী ও তাঁর বন্ধুদের কাছে কোনো তথ্য থাকলে তা তাদের জানাতে অনুরোধ করেন। মামলার আসামি হিসেবে তাঁর বাবাকে গ্রেপ্তার করা হলো কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মনোরম বলেন, থানা, ডিবি ও র্যাব কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে তাঁর বাবাকে গ্রেপ্তার করেনি।
আজ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের নবনির্বাচিত সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু উপস্থিত ছিলেন।
নিখোঁজের বিষয়ে জানতে চাইলে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুদ হাওলাদার আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, শফিকুলকে উদ্ধারে থানা-পুলিশের পাশাপাশি ডিবি ও র্যাব কাজ করছে। তবে পুলিশ নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে কিছু বুঝে উঠতে পারছে না।
যুবলীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া-কাণ্ড নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে গত সোমবার রাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে শেরেবাংলা থানায় মামলা করেন মাগুরা-১ আসনের সরকারদলীয় সাংসদ সাইফুজ্জামান শিখর। শফিকুল ইসলাম তাঁর ফেসবুকে প্রকাশিত খবরের শেয়ার করায় তাঁকেও ওই মামলায় আসামি করা হয়।
এদিকে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এক বিবৃতিতে শফিকুল নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁকে অবিলম্বে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধারে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ত্বরিত পদক্ষেপে গ্রহণের দাবি জানান। শফিকুল মেহেরপুর জাসদের জেলা কমিটিরও সদস্য।