২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

সাংসদ জ্যাকবের বিরুদ্ধে কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ ঠিকাদারদের

আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব
আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব

ভোলা-৪ (চরফ্যাশন-মনপুরা) আসনের সাংসদ আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের বিরুদ্ধে কমিশন বাণিজ্য ও অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন ২৫ জন ঠিকাদার। ভোলা সদরের এই ঠিকাদারেরা স্থানীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আজ বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করেন।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, সাংসদ ও তাঁর লোকজন ভোলার ঠিকাদারদের চরফ্যাশন ও মনপুরা উপজেলায় উন্নয়নকাজ করতে বাধা দিচ্ছেন। কাজ করতে হলে সাংসদের লোকজনকে ২০ শতাংশ কমিশন দিয়ে গ্রিনকার্ড নিতে হয়। এই সমস্যার সমাধান করা না হলে তাঁরা লাগাতার আন্দোলন করার কথা বলেন। তাঁরা সংবাদ সম্মেলনে সাংসদের নানা অনিয়ম-দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরেন।

তবে সাংসদ আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তিনি বলেন, এসব অভিযোগের কোনো ভিত্তি-প্রমাণ নেই। তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। একটি পক্ষ তাঁর ইমেজ ক্ষুণ্ন করতে চাইছে।

আজ ঠিকাদারদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঠিকাদার রুহুল আমিন। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ভোলার ঠিকাদারেরা চরফ্যাশন-মনপুরায় প্রায় ৩০টি সড়ক সংস্কার ও নির্মাণকাজ পেয়েছেন। কাজের দর প্রায় ৭০ কোটি। ভোলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী ঠিকাদারকে লিখিতভাবে কার্যাদেশ বুঝিয়ে দিয়েছেন। তিনি এসব কাজের কার্যাদেশ দিয়েছেন ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। তবে এখনো মনপুরা ও চরফ্যাশন উপজেলার প্রকৌশলীরা ঠিকাদারদের কাজের সাইট বুঝিয়ে দেননি। উপজেলা প্রকৌশলীরা কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার নামে নানা ছলচাতুরী করে বলছেন, সাংসদ কাজ বুঝিয়ে দিতে বললেই বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

অভিযোগের বিষয়ে মনপুরা উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মকবুল হোসেন ও চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মোশারেফ হোসেন বলেন, ঠিকাদারদের অভিযোগ সত্য নয়।

আজকের সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘আমরা ঠিকাদার। আমাদের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নেই। আমরা চাই বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হোক। বিনা বাধায় কমিশন ছাড়া কাজ করতে চাই।’

সাংসদ আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের বিরুদ্ধে কমিশন বাণিজ্য ও অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেন ২৫ জন ঠিকাদার। ভোলা প্রেসক্লাব, ২০ ফেব্রুয়ারি। ছবি: প্রথম আলো
সাংসদ আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের বিরুদ্ধে কমিশন বাণিজ্য ও অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেন ২৫ জন ঠিকাদার। ভোলা প্রেসক্লাব, ২০ ফেব্রুয়ারি। ছবি: প্রথম আলো

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মেসার্স জুলফিকার আহমেদ, তহুরা এন্টারপ্রাইজ, উর্মি এন্টারপ্রাইজ, ইলিয়াছ এন্টারপ্রাইজ, ইলি এন্টারপ্রাইজ, হাওলাদার কনস্ট্রাকশন, জেরিন অ্যান্ড কোং, হায়দার বিল্ডার্স, মেসার্স জাহাঙ্গীর আলম, এসএস ট্রেডিং, ক্ল্যাসিক্যাল এন্টারপ্রাইজসহ ২৫টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ২০ জন ঠিকাদার।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠের পরে প্রশ্নোত্তর পর্বে সাংসদের বিরুদ্ধে কমিশন বাণিজ্যের কোনো প্রমাণ আছে কি না, জানতে চাইলে ঠিকাদার জুলফিকার আহমেদ বলেন, তাঁর কাছে মুঠোফোন রেকর্ড আছে। সাংসদ তাঁকে হুমকি দিয়েছেন।

এসব অভিযোগের বিষয়ে ভোলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমরা টেন্ডার করেছি। প্রায় ১৫০ জন ঠিকাদারের মধ্যে লটারিতে একজন ঠিকাদার যখন কাজ পেয়েছে, তাঁকে আমি কার্যাদেশ দিয়েছি। তাঁকে আমরা সাইট (লে আউট) বুঝিয়ে দেব। এবং কাজের পরিবেশ তৈরি করব। এটাই আমাদের দায়িত্ব।’