বিয়ের ২ দিনের মাথায় ডাকাতের গুলিতে প্রবাসী নিহত
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার সাপেরগাড়া এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে ডাকাতের গুলিতে মালয়েশিয়াপ্রবাসী এক যুবক নিহত হয়েছেন। পরে আজ বুধবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে ডাকাত সন্দেহে এক যুবক গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন। দুজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে আটক করেছে পুলিশ।
ডাকাতের গুলিতে নিহত প্রবাসীর নাম মো. নুরুন্নবী (২৫)। তিনি মালয়েশিয়া থেকে এক মাস আগে দেশে ফেরেন। ৯ ফেব্রুয়ারি তিনি বিয়ে করেন।
গণপিটুনিতে নিহত যুবকের নাম জামাল উদ্দিন (৩৫)। তিনি একই উপজেলার উত্তরের জুমের পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দা। আটক দুই যুবক হলেন উপজেলার সপোরগাড়া এলাকার মো. কাইছার (২৫) ও নাসির হোসেন (২৮)।
এলাকার লোকজন ও পুলিশ জানায়, গতকাল রাত আটটার দিকে ৮ থেকে ১০ জনের মুখোশ পরা একটি ডাকাত দল নুরুন্নবীর বাড়িতে হানা দেয়। বাড়ির উঠানে নুরুন্নবীর বড় ভাই ফরিদুল আলমকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বেঁধে ফেলে তারা। এরপর এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে ঘরের দরজা খোলার চেষ্টা করে ডাকাতেরা। একপর্যায়ে রান্নাঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকে ডাকাত দল। নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার না দেওয়ায় নুরুন্নবীর বাঁ হাতে কোপ দেয় ডাকাতেরা। পরিবারের নারী সদস্যদের কাছ থেকে স্বর্ণ ছিনিয়ে নিয়ে নুরুন্নবীর বুকে গুলি চালিয়ে তাঁকে হত্যা করে তারা। নুরুন্নবীর ছোট ভাই মোজাম্মেল হককেও (২২) এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করা হয়। তাঁদের মা হাজেরা বেগমকে (৮০) মারধর করে ডাকাত দলের সদস্যরা।
নুরুন্নবীর বড় ভাই ফরিদুল আলম বলেন, ‘গতকাল দুপুরে নুরুন্নবীর শ্বশুরবাড়ি থেকে পাঁচজন মেহমান বেড়াতে আসেন। রাতে খাওয়াদাওয়া সেরে তাঁদের এগিয়ে দিতে সাপেরগাড়া স্টেশনে যাই। সেখান থেকে ফেরার পথে বাড়ির উঠানে একদল ডাকাত অস্ত্রের মুখে আমাকে জিম্মি করে। এরপর ঘরে ঢুকে স্বর্ণালংকার লুট ও ভাইকে হত্যা করে বের হয়ে যায় ডাকাত দলের সদস্যরা।’
স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, এ ঘটনায় গ্রামের লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। আজ ভোরের আলো ফুটতেই পাঁচ শতাধিক মানুষ সাপেরগাড়া পাহাড়ে ঢুকে পড়ে। সন্দেহভাজন ডাকাতদের বসতঘরে হামলা ও তিনজনকে পিটুনি দেওয়া হয়। এর মধ্যে একজন নিহত ও দুজন গুরুতর আহত হন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে। গুরুতর আহত দুজনকে আটক করে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।
পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল আজম বলেন, মালয়েশিয়াপ্রবাসী নুরুন্নবীর লাশ গতকাল রাতে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। জনতার পিটুনিতে নিহত ব্যক্তির লাশও ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে।