নারীকে খুনের কথা স্বীকার করলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র
রাজধানীর ডেমরায় সাথী আক্তার (৩৫) নামের এক নারীকে কুপিয়ে হত্যা করার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন এক যুবক। তাঁর নাম খালেদুর রহমান অনিক।
পুলিশ বলছে, খালেদুর রহমান রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র।
আজ রোববার ডেমরা থানার পুলিশ খালেদুরকে ঢাকার আদালতে হাজির করে তাঁর ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করে। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ডেমরার আদর্শবাগ এলাকার জনৈক বাবুল খানের বাড়ির নিচতলা থেকে সাথী আক্তারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত সাথী আক্তারের মেয়ে মনিরা আক্তার বাদী হয়ে ডেমরা থানায় আজ একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডেমরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম প্রথম আলোকে বলেন, আসামি খালেদুর রহমান মোহাম্মদপুরের একটি মেসে থাকতেন। ধানমন্ডিতে অবস্থিত একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি পড়াশোনা করতেন। ডেমরায় যে বাসায় সাথী আক্তার খুন হয়েছেন, সেই বাসায় ভাড়া থাকতেন খালেদুরের বোন। খালেদুর রহমান তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদে এবং আদালতের কাছে বলেছেন, গতকাল সকালে তিনি সাথী আক্তারকে নিয়ে যান ডেমরায় তাঁর বোনের বাসায়। তাঁদের মধ্যে কথা–কাটাকাটির এক পর্যায়ে খালেদুর সাথী আক্তারকে বটি দিয়ে খুন করে লাশ বাথরুমের ভেতর রেখে দেন।
সাথী আক্তারের পরিবার, মামলার এজাহার এবং পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাথী আক্তার তাঁর স্বামীর সঙ্গে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় ভাড়া থাকতেন। গতকাল সকালে বাসা থেকে বের হয়ে যান সাথী আক্তার। এরপর পরিবারের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ করেননি তিনি। রাত সাড়ে ১১টার সময় একটি মুঠোফোন নম্বর থেকে সাথী আক্তারের মেয়ের মুঠোফোন নম্বরে একজন কল দেন। সাথী আক্তার যে খুন হয়েছেন, সেই তথ্য জানানো হয়।
সাথী আক্তারের মেয়ের স্বামী লিটন প্রথম আলোকে বলেন, কাজের উদ্দেশ্যে বের হয়ে যান তাঁর শাশুড়ি। পরে রাতে জানতে পারেন, ডেমরায় তাঁর শাশুড়ি খুন হয়েছেন। কী কারণে এবং কেন খুন হয়েছেন, তার কিছুই জানেন না তাঁরা।
এসআই শাহ আলম বলেন, আসামি খালেদুর রহমান মোহাম্মদপুরে থাকলেও মাঝেমধ্যে ডেমরায় বোনের বাসায় গিয়ে অবস্থান করতেন। তাঁর বোন অসুস্থ থাকায় গ্রামের বাড়ি গেছেন। খালেদুরের কাছে বাসার চাবি রয়েছে। খালেদুর সকাল নয়টার দিকে নিহত সাথী আক্তারকে ফার্মগেট থেকে নিয়ে যান ডেমরার ওই বাসায়। ১৫ মিনিটের ব্যবধানে টাকাসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সাথী আক্তারকে খুন করেন। স্থানীয় লোকজন খালেদুরকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। পরে তাঁদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
যত দ্রুত সম্ভব মামলাটির তদন্ত শেষ করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে বলে জানান এসআই শাহ আলম।