আলুর খেতে নাবিধসা রোগ
ঠাকুরগাঁওয়ে টানা শীত ও কুয়াশার কারণে আলুগাছে ছত্রাকজনিত নাবিধসা (লেট ব্লাইট) রোগ দেখা দিয়েছে। একই কারণে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে কৃষক বিপাকে পড়েছেন।
আলুর নাবিধসা রোগ ঠেকাতে কৃষি বিভাগের পরামর্শে খেতে ছত্রাকনাশক ছিটাচ্ছেন কৃষক। এতে আলুর উৎপাদন খরচ বাড়ছে। এদিকে বীজতলা বাঁচাতে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখছেন চাষিরা।
ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, নিম্ন তাপমাত্রা ও টানা ঘন কুয়াশা আলুগাছে ছত্রাকজনিত রোগ বিস্তারে সহায়তা করে। আবার হঠাৎ শীত কমে গেলেও ছত্রাকের সংক্রমণ বেড়ে যায়। এ অবস্থায় আলুখেতে নাবিধসা রোগ দেখা দেয়। এতে আলুর ফলন আশঙ্কাজনক হারে কমে যায়।
সদর উপজেলার বড়গাঁও গ্রামের আতাউর রহমান বলেন, ‘৬০ হাজার টাকা খরচ করে দুই বিঘা জমিতে আলুর আবাদ করেছি। এর মধ্যে এক বিঘা খেতে লেট ব্লাইট দেখা দিয়েছে। প্রথমে আক্রান্ত গাছের পাতা ঝলসে যায়, পরে গাছ মারা যাচ্ছে। আলুখেত রক্ষা করতে ছত্রাকনাশক ছিটিয়ে যাচ্ছি।’
গত মঙ্গল ও বুধবার সদর উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, ইয়াকুবপুর, বৈকুণ্ঠপুর, ফাড়াবাড়ি, চামেশ্বরী, ভুল্লি ও বালিয়া এলাকায় অনেক কৃষক আলুখেতে ছত্রাকনাশক ছিটাচ্ছেন।
জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আফতাব হোসেন বলেন, নাবিধসা রোগ প্রতিরোধের জন্য শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশার সময় আলুখেতে অনুমোদিত মাত্রায় যেকোনো কপার ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করতে হবে। আবহাওয়া ভালো হয়ে গেলে ছত্রাকনাশক ছিটানোর প্রয়োজন পড়ে না। অনেক কৃষক না বুঝে ছত্রাকনাশক ছিটিয়ে টাকা গচ্চা দিচ্ছেন।
গত বুধ ও বৃহস্পতিবার পাটগ্রাম উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, ধবলসূতী, গাটিয়ারভিটা, কাউয়ামারী, পানবাড়ি, দৌলতপুর, লক্ষ্মনার্থের কামাত, ঝাকুয়াটারী, চাত্রারপাড়, সিঙ্গিমারীরপাড় ও মির্জারকোট গ্রামে কৃষকেরা বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রেখেছেন।
পানবাড়ি গ্রামের সহিদুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে বীজতলার বেশির ভাগ চারা নষ্ট হয়ে গেছে। চারা রোপণের প্রায় ১৫-২০ দিন আগে বীজতলার রং হলদে হয়ে আসছে এবং তা ধীরে ধীরে পচে যাচ্ছে। আবার কোনো রকম গজালেও চারা বড় হচ্ছে না।
জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল গফফার বলেন, শীত ও কুয়াশার হাত থেকে বীজতলা সুরক্ষায় পলিথিনের ঢাকনা ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।