তুরাগতীরে লাখো মুসল্লির 'আমিন আমিন' ধ্বনি
টঙ্গীর তুরাগতীর, আশপাশের এলাকা, সড়ক-মহাসড়ক-অলিগলিতে লাখো মুসল্লি। যে যেখানে দাঁড়িয়ে বা বসে, সবার হাত ওপরে তোলা। কারও চক্ষু মুদিত। কারও দৃষ্টি সুদূরে প্রসারিত। সবাই সমস্বরে উচ্চারণ করছেন ‘আমিন, আমিন’।
আজ রোববার এভাবেই বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন লাখো মুসল্লি। মোনাজাতে দেশের জন্য অব্যাহত শান্তি, সমৃদ্ধি, অগ্রগতি ও কল্যাণের পাশাপাশি মুসলিম উম্মাহর বৃহত্তর ঐক্য কামনা করা হয়। এই মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো এ বছরের বিশ্ব ইজতেমা।
আজ মোনাজাত শুরু হয় বেলা ১১টা ৪৯ মিনিটে। সঙ্গে সঙ্গে মুসল্লিরা বসে পড়েন যে যাঁর জায়গায়। মাইকে ভেসে আসে আরবি ও উর্দু ভাষায় মোনাজাতের ধ্বনি।
মোনাজাতে বলা হয়, ‘হে আল্লাহ, হামকো মাফ ফরমা দে। হে আল্লাহ, হামকো ইলম কবুল ফরমা সে। হে আল্লাহ, হাম সবকো মাফ ফরমা দে। হে আল্লাহ হামারা দুয়া কবুল ফরমা দে, দিল মে হেদায়েত ফরমা দে।’
এ সময় লাখো মুসল্লির ‘আমিন আমিন’ ধ্বনি ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।
মোনাজাত চলে টানা ১৭ মিনিট।
বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয় গত শুক্রবার। এই পর্বের ইজতেমায় অংশ নেন ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা। মোনাজাত পরিচালনা করেন ভারতের মাওলানা জামশেদ। এর আগে প্রথম পর্বের ইজতেমা হয় ১০ থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত। ওই পর্বের ইজতেমায় অংশ নেন মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা।
দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমার শেষ দিনের কার্যক্রম শুরু হয় বাদ ফজর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে। বয়ান করেন ভারতের মাওলানা ইকবাল হাবিব। বয়ান বাংলায় তরজমা করেন বাংলাদেশের মাওলানা ওয়াসিফুল। বয়ান চলে সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত। খাবারের বিরতি শেষে সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হয় হেদায়েতি বয়ান। বয়ান করেন ভারতের মাওলানা জামশেদ। এরপর তিনিই আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন।
১৯৬১ সাল থেকে বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের আয়োজনে ইজতেমা হয়ে আসছে। ২০১৮ সালে তাবলিগের বর্তমান আমির ভারতের দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভীকে মানা না-মানাকে কেন্দ্র করে বিভক্ত হয়ে পড়ে তাবলিগ জামাত। ওই বছর ইজতেমায় অংশ নিতে বাংলাদেশে এসে বিরোধের মুখে ফিরে যান তিনি। বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের বিরোধে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে তুরাগ ময়দানে সংঘর্ষে নিহত হন এক মুসল্লি। এরপর ২০১৯ সাল থেকে দুই পক্ষ আলাদাভাবে ইজতেমা শুরু করে।