প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছেন দেশের ৪৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক। ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের ছাত্র নাইমুল আবরারের অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে করা মামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার এই পরোয়ানা জারি করেন বিচারিক আদালত।
আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে ৪৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক বলেছেন, ‘মামলাটি দায়েরের আগে-পরে এ বিষয়ে যেভাবে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা বক্তব্য দিয়েছেন এবং এই মামলায় প্রথম আলো সম্পাদককে যেভাবে সম্পৃক্ত করা হয়েছে, তাতে মামলাটি আমাদের কাছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে হয়েছে।’
এ ছাড়া এই মামলায় সমন জারি করে বিচারকাজ পরিচালনার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে উচ্চ আদালতে প্রতিকার চাওয়ার সুযোগকে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে বলে মনে করেন তাঁরা।
বিশিষ্ট নাগরিকেরা বলেন, দেশে বাক্স্বাধীনতার ওপর একের পর এক যেসব আঘাত আসছে, তা থেকে মামলাটিকে পৃথক করে দেখার কোনো অবকাশ নেই। তাঁরা এই মামলায় প্রথম আলো সম্পাদকসহ সব অভিযুক্ত ব্যক্তির পরিপূর্ণ আইনগত প্রতিকার ও সম্পূর্ণ প্রভাবমুক্ত ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার অবারিত রাখার দাবি জানান। একই সঙ্গে এ ধরনের মামলাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাক্স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে রুদ্ধ করার কাজে ব্যবহার করার চেষ্টা থেকে সবাইকে বিরত থাকারও আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা হলেন ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, মানবাধিকারকর্মী হামিদা হোসেন, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান ও সুলতানা কামাল, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন, অধ্যাপক সি আর আবরার, অধ্যাপক আলী রীয়াজ, অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, আইনজীবী শাহদীন মালিক, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, আইনজীবী জেড আই খান পান্না, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ, উন্নয়নকর্মী খুশী কবির, অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, অধ্যাপক শাহনাজ হুদা, অধ্যাপক স্বপন আদনান, অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, পরিবেশ আইনবিদ সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, অধ্যাপক ফেরদাউস আজিম, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, অধ্যাপক পারভীন হাসান, নারী নেত্রী ফরিদা আখতার ও শিরীন হক, গবেষক ও লেখক মালেকা বেগম, অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, মানবাধিকারকর্মী নূর খান, ফসটিনা পেরেরা, হাসিবুর রহমান ও হানা সামস আহমেদ, লেখক ওমর তারেক চৌধুরী, চিকিৎসক নায়লা জামান খান, উন্নয়নকর্মী জাকির হোসেন, সাংবাদিক গোলাম মোর্তোজা, লেখক রেজাউর রহমান লেনিন ও অরূপ রাহী এবং আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম ও সিনথিয়া ফরিদ।
আরও পড়ুন: