পাহাড়ে কী ধরনের বৈষম্য চলছে, তা দেশবাসীর অজানা: রাজা দেবাশীষ
দেশবাসী জানে না পার্বত্য চট্টগ্রামে কেমন পরিস্থিতি চলছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন পরিস্থিতি ও এই অঞ্চলের বর্তমান অবস্থা নিয়ে এক সংলাপে এ মন্তব্য করেছেন চাকমা সার্কেলের প্রধান রাজা দেবাশীষ রায়। তিনি বলেছেন, পাহাড়ে কী ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ চলছে, তা দেশবাসীর অজানা।
আজ বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘পার্বত্য চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন বনাম পার্বত্য চট্টগ্রামের বর্তমান পরিস্থিতি’ শীর্ষক এক জাতীয় সংলাপে এ কথা বলেন রাজা দেবাশীষ। বেসরকারি সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) ও পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশন এই সংলাপের আয়োজন করে।
এতে রাজা দেবাশীষ রায় পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য, স্বতন্ত্র প্রশাসনিক ব্যবস্থা, ভূমি সমস্যা, চুক্তি বাস্তবায়নে নানা পক্ষের অবস্থান, সরকার গঠিত পার্বত্য ভূমি কমিশনের বর্তমান অবস্থা নিয়ে কথা বলেন। তিনি পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে দীর্ঘসূত্রতার অভিযোগ তুলে বলেন, ‘এখন পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে ক্যালকুলেটর নিয়ে বসা হচ্ছে। চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন চাই।’
প্রসঙ্গত, পার্বত্য চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে সরকার বলছে ৪৮টি ধারা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। অন্যদিকে চুক্তি স্বাক্ষরকারী পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি বলছে, ২৪টি ধারা বাস্তবায়ন হয়েছে।
রাজা দেবাশীষ অভিযোগ করেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম যে একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত এলাকা, আজ সেই পরিচিতিটাই মুছে ফেলার চেষ্টা চলছে। এর স্বাতন্ত্র্যকে অস্বীকার করার উদ্যোগ আছে অনেক ক্ষেত্রে। অথচ সরকার যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, তাতে এই অঞ্চলকে ‘অনগ্রসর, উপজাতি অধ্যুষিত’ এলাকা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
পাহাড়ে বিবদমান আঞ্চলিক দলগুলোর মধ্যে সংঘাতে অনেক মানুষ হতাহত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে দেবাশীষ রায় বলেন, সেখানে পাঁচটি দলের দ্বন্দ্বের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কি সব দলকে সমানভাবে দেখছে?
গত বছর পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সুপারিশমালার সমালোচনা করেন দেবাশীষ রায়। চার দফা সুপারিশমালার প্রথমটিতে বলা হয়, ‘নিরাপত্তা বাহিনী এবং প্রশাসন কর্তৃক বাঙালিদের প্রতি সহানুভূতিশীল ও মানবিক আচরণ এবং হেয়প্রতিপন্ন না করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা যেতে পারে।’ এ প্রসঙ্গে দেবাশীষ রায় প্রশ্ন রাখেন, এই সুপারিশমালায় স্থানীয় পাহাড়িদের প্রতি মানবিক আচরণ করার কথা কি একটু বলা যেত না?