লাল শাপলার হাসি
জলমগ্ন বিল। কিন্তু বিলের জল প্রায় দেখাই যায় না। সবুজ পাতার আচ্ছাদনে ঢাকা পড়েছে বিস্তীর্ণ জলরাশি। জল আর পাতার ফাঁক গলে ফুটে আছে থোকা থোকা লাল শাপলা। তাই বিলজুড়ে লাল-সবুজের সমারোহ। সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার উত্তর-পূর্ব দিকের পাশাপাশি চারটি বিল এখন এ রকম অপরূপ সাজে সেজে রয়েছে। শুকনো মৌসুমজুড়েই দৃশ্যমান থাকবে এ রূপ। লাল শাপলায় ছেয়ে যায় বলে চারটি বিলই ‘লাল বিল’ নামে পরিচিতি পায় এ মৌসুমে।
বিলগুলোর নাম হচ্ছে ডিবি বিল, কেন্দ্রী বিল, হরফকাটা বিল ও ইয়াম বিল। চারটি বিলের অবস্থান বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে। প্রথম দেখাতেই মনে হবে লাল শাপলার মাঠ। গত শনিবার সরেজমিনে দেখা গেল চারটি বিলের জলে এই লাল শাপলার হাসি।
চার বিলের আশপাশ এলাকার বাসিন্দারা জানান, তিন দশক ধরে শুকনো কালের অন্তত তিন মাস চারটি বিলের এ রকম চেহারা থাকে। এর আগে এমন রূপে বিলগুলোকে দেখেননি কেউ।
প্রায় ৭০০ একর জায়গায় বিস্তৃত চারটি বিল। পুরো বিল ঢাকা পড়েছে শাপলায়। বিল চারটির অবস্থান সীমান্তের এপার-ওপার হওয়ায় বিল চষে বেড়ানোর সুযোগ নেই। শাপলা ফোটার মৌসুমে এপার-ওপারে প্রতিদিন বিকেলবেলা শিশু-কিশোরদের খেলা করতে দেখা যায়। এপার-ওপারের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের লাল শাপলা পূজা-পার্বণে প্রয়োজন হয়।
সিলেটের এমসি কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক রজত কান্তি সোম জানালেন, শাপলা জলজ উদ্ভিদ পরিবারের একটি প্রজাতি। উইকিপিডিয়ার তথ্যমতে, বিশ্বে এই উদ্ভিদের প্রায় ৩৫টি প্রজাতি পাওয়া গেছে। বাংলাদেশে সাদা ও লাল শাপলা দেখা যায়। এর মধ্যে লাল শাপলা ক্রমে বিলুপ্ত হওয়ায় জৈন্তাপুরের ওই চারটি বিল অন্তত শুকনো মৌসুমে নজরদারির মধ্যে রাখা উচিত।