ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত মহিমার সঙ্গে কেউ নেই
ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত আড়াই বছর বয়সী শিশু মহিমা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের নামের তালিকায় তার নাম লেখা আছে মহিমা আক্তার নামে। শিশুটির সঙ্গে কেউ নেই। সে স্বজনদের খুঁজছে। হাসপাতালের নার্সরা তার দেখভাল করছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শওকত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সকালে আহত রাহিমা আক্তার নামের এক বৃদ্ধা ওই শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন। রাহিমা চাঁদপুরের সাতিরাশির বাসিন্দা। তখন তিনি এই শিশুর নাম মহিমা বলে জানান। তার বাবার নাম মঈন উদ্দিন এবং চাঁদপুরের কাকলী তিতাসের বাসিন্দা বলে জানালে রেজিস্টার্ড বইয়ে সেটিই উল্লেখ করা হয়।
শওকত হোসেন জানান, শিশুটির কপালের বাম পাশ থেকে মাথার পেছন অংশ পর্যন্ত ব্যান্ডেজ করা হয়েছে। কপালে সেলাই দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে শিশুটি হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্সদের তত্ত্বাবধানে আছে।
গতকাল সোমবার রাত পৌনে তিনটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা ও সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায় পড়ে। উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের মাঝামাঝি বগিতে ঢুকে পড়ে তূর্ণা নিশীথা। ট্রেন দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত হন। আহত হন শতাধিক। আহতদের উদ্ধার করে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
আহত এই শিশুকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এই হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত ৪১ জন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এর মধ্যে আজ মঙ্গলবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে আড়াই বছরের একটি মেয়ে শিশুকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাকে বর্তমানে হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
সার্জারি ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র স্টাফ নার্স সেলিনা আক্তার ও শিক্ষানবিশ নার্স তাহরিমা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, শিশুটিকে নার্সদের কক্ষে রাখা হয়েছে। কারণ, মানুষ ভিড় করছে। শিশুটি একটু পর পর শুধু বাইরে যাবে বলে জানায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার এনামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, একজন নারী নিজেকে শিশু মহিমার ফুফু এবং এক ব্যক্তি নিজেকে এই শিশুর চাচা বলে দাবি করেছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের বলেছে, শিশুটির বাবা-মাকে নিয়ে আসতে। প্রকৃত অভিভাবক ছাড়া অন্য কারও কাছে এই শিশুকে হস্তান্তর করা হবে না।