সাংসদ হারুনের কারামুক্তিতে বাধা নেই
শুল্কমুক্ত গাড়ি এনে দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত বিএনপির সাংসদ হারুন অর রশীদকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রয়েছে। এ জামিন স্থগিত চেয়ে দুদকের করা আবেদনে ‘নো অর্ডার’ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ আজ বুধবার এ আদেশ দেন। এর ফলে কেরানীগঞ্জ কারাগারে থাকা বিএনপির এই সাংসদের এখন কারামুক্তিতে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তাঁর অন্যতম আইনজীবী সৈয়দ মিজানুর রহমান।
এর আগে ২৮ অক্টোবর হাইকোর্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের এই সাংসদকে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছিলেন। সাজার রায়ের বিরুদ্ধে হারুন অর রশীদের করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে এ আদেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তাঁকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ৫০ লাখ টাকার অর্থদণ্ড স্থগিত ও মামলার নথিপত্র তলব করা হয়।
হাইকোর্টের ওই জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে দুদক গতকাল আবেদন করে, যা চেম্বার বিচারপতির আদালত হয়ে আজ বুধবার আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে।
আদালতে দুদকের (দুর্নীতি দমন কমিশন) পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। হারুনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ মিজানুর রহমান, মাহবুবউদ্দিন খোকন ও হারুনের স্ত্রী আইনজীবী সৈয়দা আসিফা আশরাফি পাপিয়া।
পরে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্টের আদেশের অনুলিপি হাতে পাওয়ার পর নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করা হবে।
২০০৭ সালে এক-এগারোর পট পরিবর্তনের পর ১৭ মার্চ তিনজনের বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় মামলাটি করে পুলিশ। মামলাটি তদন্ত করে সাংসদ হারুনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ওই বছরের ১৮ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে হারুনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ২০ আগস্ট বিচার শুরু করেন আদালত।
বিচারিক আদালতের রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন হারুন অর রশীদ। সেদিন আদালত তাঁকে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। অন্য দুই আসামির সাজা হয়। এর মধ্যে চ্যানেল নাইনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনায়েতুর রহমানকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং গাড়ি ব্যবসায়ী ইশতিয়াক সাদেককে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৪০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই দুজন পলাতক থাকায় তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, তৎকালীন সাংসদ হারুন অর রশীদ ২০০৫ সালে যুক্তরাজ্য থেকে একটি হামার ব্র্যান্ডের গাড়ি শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করেন। পরে গাড়িটি নিজে ব্যবহার না করে ইশতিয়াক সাদেকের মাধ্যমে বাজারদরের চেয়ে কম দামে এনায়েতুর রহমানের কাছে বিক্রি করেন। আইন অনুযায়ী, শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা গাড়ি তিন বছরের আগে বিক্রি করলে শুল্ক দিতে হবে। কিন্তু হারুন সে শর্ত ভঙ্গ করে গাড়িটি বিক্রি করে দেন।