তিন দিন ধরে ফেরি চলাচল প্রায় বন্ধ, ঘাটে ভোগান্তি
পদ্মা নদীতে নাব্যতা–সংকটের কারণে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ও মাদারীপুরের শিবচরের কাঁঠালবাড়ি নৌপথে ফেরি চলাচল চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল করলেও নাব্যতা–সংকটের কারণে গত রোববার দুপুর থেকে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত এই নৌপথে ফেরি চলাচল প্রায় বন্ধ ছিল। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে যাত্রীরা। পণ্য পরিবহনের অনেক গাড়ি পাঁচ–ছয় দিন ধরে ঘাটে পারের অপেক্ষায় রয়েছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) বলছে, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) গাফিলতির কারণে নদীতে ড্রেজিং হচ্ছে না। তবে বিআইডব্লিউটিএর ভাষ্য, এ মৌসুমে পদ্মায় প্রচুর পলি জমেছে। পলি অপসারণে একাধিক খননযন্ত্র দিয়ে দিন–রাত কাজ চলছে।
শিমুলিয়া ঘাট কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সূত্র বলেছে, বন্যার পানি পদ্মা নদী হয়ে দ্রুত সাগরের দিকে যাচ্ছে। এ পানিতে প্রচুর পলি মাটি রয়েছে। এ কারণে গত এক মাসের বেশি সময় ধরে পদ্মায় নাব্যতা–সংকট দেখা দিয়েছে। গত রোববার সকাল থেকে শিমুলিয়া–কাঁঠালবাড়ি নৌপথে এ সংকট তীব্র আকার ধারণ করে। এ জন্য তিন দিন ধরে ১৭টি ফেরির মধ্যে মাত্র তিনটি ছোট ফেরি কোনো রকমে চলছে। ফলে ঘাটে আটকা পড়েছে পাঁচ শতাধিক যানবাহন।
বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. আলীমুজ্জামান গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, একটি বড় ফেরি চলতে কমপক্ষে সাত থেকে সাড়ে সাত ফুট গভীর পানি দরকার। কিন্তু পদ্মা নদীতে এই নৌপথে পানি আছে সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় ফুট। ছোট যে তিনটি ফেরি চলছে, সেগুলোর তলদেশও কোথাও কোথাও মাটিতে আটকে যাচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসির কাঁঠালবাড়ি ঘাটের ব্যবস্থাপক সালাম হোসেন বলেন, ‘চ্যানেলের মুখে বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগ খননযন্ত্র বসিয়েছে। কিন্তু পলি অপসারণে তারা কী কাজ করছে, তা আমাদেরও প্রশ্ন?’
বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. এনামুল হক বলেন, ‘নদীতে পলির মাত্রা বেশি। পাঁচটি খননযন্ত্র দিয়ে খননকাজ চলছে। আশা করছি আগামী শুক্রবারের মধ্যে কাজটি শেষ হবে।’
গোয়ালন্দে কমেছে ভাঙনের তীব্রতা
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে পদ্মার পানি দ্রুত কমায় ভাঙনের তীব্রতা কমে এসেছে। গত তিন দিনে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকার আরও ২০ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী ব্যবস্থাপক মাহবুব আলী সরদার বলেন, পদ্মার ভাঙনের কবলে পড়ে ১ ও ২ নম্বর ঘাট এখনো বন্ধ রয়েছে। নদীতে স্রোতের তীব্রতা ও ভাঙন কমায় ফেরির সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। গতকাল দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে ছোট-বড় ১৪টি ফেরি চলেছে।