পেঁয়াজের উৎপাদন নিয়ে সরকারের দুই সংস্থার দুই রকম তথ্য
দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন নিয়ে দুই রকম হিসাব দিচ্ছে সরকারের দুই সংস্থা। এক সংস্থার সঙ্গে অন্য সংস্থার উৎপাদনের তথ্যে ফারাকও কম নয়, ৫ লাখ টনের বেশি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) হিসাবে, ২০১৮–১৯ অর্থবছরে দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ২৩ লাখ ৩০ হাজার টন। অন্যদিকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) বলছে, পেঁয়াজের উৎপাদন ১৮ লাখ ৩ হাজার টন। পেঁয়াজ উৎপাদনের এই ‘বিভ্রান্তিকর’ পরিসংখ্যান নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, দেশে পেঁয়াজের কোনো ঘাটতি নেই। মানুষের আতঙ্কিত হওয়ারও কোনো কারণ নেই।
অবশ্য খুচরা বাজারে গতকাল মঙ্গলবারও পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৯০ থেকে ১১০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। তবে পাইকারি বাজারে দাম বেশ কিছুটা কমেছে। পুরান ঢাকার শ্যামবাজারে গতকাল ভারতীয় পেঁয়াজ ৭৫ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ ৮৫ টাকায় বিক্রি হয়। যা আগের দিন অনেকটা হুজুগে ১০০ টাকায় উঠেছিল।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, পেঁয়াজ পচনশীল পণ্য। এখন যে দাম আছে, সেই দামে বিক্রি করা খুবই লাভজনক। এখন কেউই আর বেশি দামের আশায় বসে থাকবেন না। কারণ, আগামী ডিসেম্বরেই দেশে নতুন পেঁয়াজ উঠবে। আবার অন্যান্য দেশ থেকেও পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে।
উৎপাদন বিভ্রান্তি
দেশে পেঁয়াজ উৎপাদনের পরিসংখ্যান তৈরি করে বিবিএস ও ডিএই। বিবিএসের কর্মকর্তারা অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রথম আলোকে বলেছেন, তাঁরা জেলায় জেলায় নিজেদের কার্যালয়ের মাধ্যমে উৎপাদনের তথ্য সংগ্রহ করেন। একই পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করে ডিএই। ডিএই যেহেতু উৎপাদন বাড়ানোর দায়িত্বপ্রাপ্ত, তাই তারা উৎপাদন বাড়িয়েও দেখাতে পারে। অন্যদিকে ডিএইর কর্মকর্তারা মনে করেন, বিবিএসের চেয়ে তাঁদের জনবল অনেক বেশি। বিবিএসের হিসাবেই ভুল হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
অভিযান
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য উচ্চপর্যায়ের ১০ জন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁরা বিভিন্ন জেলার বাজারে তদারকি শুরু করেছেন। বন্দরে পেঁয়াজ খালাস দ্রুত করতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, মিসর ও তুরস্ক থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ দেশে পৌঁছাতে শুরু করেছে।
এদিকে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় পেঁয়াজের দাম বেশি রাখায় ১৫টি দোকানকে ৮৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ সময় একটি গুদাম সিলগালা করা হয়। খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল রাখার অঙ্গীকার করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে। নোয়াখালীতে দুটি আড়তকে ৪৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
রাজশাহীতে পেঁয়াজের দাম বেঁধে দেয় জেলা প্রশাসন। দেশি পেঁয়াজ ৬৫–৭৫ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৬৫ টাকার বেশি দরে বিক্রি করতে পারবেন না সেখানকার ব্যবসায়ীরা।