অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করলেন জবি শিক্ষার্থীরা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ফটক ও ফুটপাত থেকে অবৈধ লেগুনাস্ট্যান্ড ও স্থাপনা উচ্ছেদ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীদের ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম শেষেও মালিকেরা স্থাপনা সরিয়ে নেননি। এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁদের দোকান ভাঙচুর করে সরিয়ে দেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে চাঁদাবাজ ও অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় ফটকের সামনে এসে জড়ো হতে শুরু করেন। এ সময় দ্বিতীয় ফটক বন্ধ থাকায় এবং ফটকের পাশের ফুটপাতের অবৈধ স্থাপনা না সরানোয় প্রতিবাদ জানিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। তবে দোকানমালিকেরা স্থাপনা না সরিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সরে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এতে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে দোকানপাট ভাঙচুর শুরু করেন।
সরজমিনে দেখা যায়, বেলা একটা পর্যন্ত ফটকের সামনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে কোনো লেগুনা দাঁড়ায়নি। শিক্ষার্থীরা প্রায় ৩০টি দোকান সরিয়ে দিয়েছেন। দোকানমালিকেরা মালামাল অন্য জায়গায় সরিয়ে নিতে শুরু করেছেন। তবে দুটি খাবার দোকান ও দুটি গ্যারেজ সরানোর জন্য মালিকেরা সময় চাইলে শিক্ষার্থীরা বেলা তিনটা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন।
গোলাম রব্বানী নামের এক গ্যারেজমালিক বলেন, ‘অল্প সময়ে অন্য জায়গা খুঁজে না পাওয়ায় গ্যারেজ সরিয়ে নিতে পারিনি। আর কিছু সময় পাওয়া গেলে পরিবার নিয়ে কম ক্ষতিগ্রস্ত হতাম। এতদিন কেউ বাধা দেয়নি, মালামাল সরিয়ে নিচ্ছি।'
শিক্ষার্থীরা জানান, গত রোববার দ্বিতীয় ফটক চালু করা ও ফটকের সামনের স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয়। পরে আরও এক দিন সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁরা কথা কানে নেননি। তাই শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে দখলদারদের ক্যাম্পাসের সামনে থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন।
এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় ফটকের নাম সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলনে মৃত্যুবরণ করা ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ওয়াসির নামে নামকরণ করার জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, কিছু চাঁদাবাজের কারণে ক্যাম্পাসের ফটক ও টিএসসিতে অবৈধ স্থাপনা স্থায়ীভাবে গড়ে উঠেছে। শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ করলেও প্রশাসন বিষয়টিতে গুরুত্ব দেয় না। তাই বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা নিজেরাই দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মীজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের যানবাহন রাখা হচ্ছে। দ্বিতীয় ফটক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের ফুটপাত দখলমুক্ত করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অবাধে চলাচল করার পরিবেশ তৈরি করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন।