বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির আদ্যোপান্ত
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় চুরির ঘটনা। আলোড়ন তুলেছিল সারা বিশ্বে। দেশে দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করে। তথ্য আদান–প্রদান ব্যবস্থায় বড় ধরনের সংস্কার আনে সুইফট। কিন্তু যে দেশের কষ্টার্জিত আয়ের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরি হলো, সেই বাংলাদেশই নেয়নি তেমন কোনো ব্যবস্থা, শাস্তি পায়নি কেউ। সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনকে প্রধান করে সরকারের গঠন করা তদন্ত কমিটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতিবেদনও দিয়েছে। সেই প্রতিবেদনে আছে অনেক অজানা তথ্য, ঘটনার নানা বিশ্লেষণ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা নিয়ে অনেক সুপারিশ।
তদন্ত প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংকের অদক্ষতা ও অবহেলাকেই মূলত দায়ী করা হয়। সেখানে আরও বলা আছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রক্ষিত বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ চুরির ক্ষেত্র প্রস্তুত করে রেখেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক নিজেই। নিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল অরক্ষিত, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ছিলেন দায়িত্বহীন। আর চূড়ান্ত সর্বনাশ ঘটানো হয় সুইফট সার্ভারের সঙ্গে স্থানীয় নেটওয়ার্ক জুড়ে দিয়ে। এর ছয় মাসের মধ্যেই গোপন সংকেত বা পাসওয়ার্ড জেনে নিয়ে চুরি হয় ৮ কোটি ১০ লাখ ১ হাজার ৬২৩ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮১০ কোটি টাকা)।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরি হয় প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে, ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে। বাংলাদেশ ব্যাংক এক দিন পরে চুরির তথ্য জানতে পারলেও তা গোপন রাখে আরও ২৪ দিন। আর বিষয়টি অর্থমন্ত্রীকে বাংলাদেশ ব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে জানায় ৩৩তম দিনে।
প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে দেওয়া ফরাসউদ্দিন কমিটির সেই প্রতিবেদন নিয়ে প্রথম আলোর আজ মঙ্গলবারের ছাপা কাগজে আছে বিশেষ আয়োজন। আয়োজনে আছে :
* বাংলাদেশ ব্যাংকের অদক্ষতা ও অবহেলায় অর্থ চুরি
* অর্থ চুরির তথ্য ২৪ দিন গোপন রাখেন আতিউর রহমান
* মানা হয়নি ফরাসউদ্দিন কমিটির সুপারিশ
* তিন বছর পর মামলা, অর্থ উদ্ধার এখনো অনিশ্চিত
* চাকরি চেয়ে ই–মেইল করেছিল হ্যাকাররা