ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের আত্মিক সম্পর্ক: হাছান মাহমুদ
ভারতের উত্তর–পূর্বের রাজ্য ত্রিপুরায় প্রথমবারের মতো শুরু হয়েছে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র উৎসব। রোববার সন্ধ্যায় এ উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
উদ্বোধনী ভাষণে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের রয়েছে এক আত্মিক সম্পর্ক। বাংলাদেশ আর ত্রিপুরার ভাষা এক—বাংলা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ত্রিপুরাবাসীর অবদানের শেষ নেই। একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ত্রিপুরার যে মানুষ ছিল, বাংলাদেশের শরণার্থীও ছিল সেই পরিমাণ। সেদিন এই ত্রিপুরার মানুষ আর বাংলাদেশের শরণার্থীরা ভাগাভাগি করে খাবার খেয়েছে। তাই তো ত্রিপুরার প্রতি বাংলাদেশের মানুষের কৃতজ্ঞতারও শেষ নেই। ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের এই ভালোবাসা থাকবে চিরদিন, চিরকাল। এ ভালোবাসার বন্ধন অটুট।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বিনিময় দীর্ঘদিন ধরে চলে এলেও এখানে এখনো বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের কোনো উৎসব হয়নি। আমরা কলকাতায় বারবার বাংলাদেশের চলচ্চিত্র উৎসব করেছি। তখন থেকে ত্রিপুরাবাসীর দাবি ছিল ত্রিপুরায় বাংলাদেশের চলচ্চিত্র উৎসব করার। ত্রিপুরাবাসীর সেই ডাকে সাড়া দিয়ে এবারই প্রথম ত্রিপুরায় বাংলাদেশের চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন করেছি। এই চলচ্চিত্র উৎসবের মধ্য দিয়ে ত্রিপুরার সঙ্গে আমাদের সাংস্কৃতিক বন্ধন আরও জোরদার হবে।’ তিনি বলেন, ‘চলচ্চিত্র আমাদের জীবনের কথা বলে। এটি সমাজের দর্পণ। মানুষের হৃদয়কে আলোড়িত করে। মানুষকে স্বপ্ন দেখায়। হাসায়, কাঁদায়।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ১৩ জন ভারতীয় নাগরিকের হাতে সম্মাননা তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরার কৃষি, পর্যটন ও পরিবহনমন্ত্রী প্রণজিত সিংহ রায়, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল করিম, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, চলচ্চিত্র প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ইসতাক হোসেন, কলকাতায় বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের প্রথম সচিব প্রেস মোখাকখারুল ইকবাল, অভিনয়শিল্পী রোকেয়া প্রাচী, চঞ্চল চৌধুরী, সাইমন, অপর্ণা ঘোষ প্রমুখ। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন আগরতলায় নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার কিরীটি চাকমা।
তিন দিনব্যাপী আয়োজিত এই চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হবে বাংলাদেশের ২০টি সিনেমা ও প্রামাণ্যচিত্র। উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ‘আমাদের বঙ্গবন্ধু’, ‘স্বাধীনতা কী করে আমাদের হলো’, ‘বিশ্ব আঙ্গিনায় অমর একুশ’, ‘জাগে প্রাণ পতাকায় জাতীয় সংগীতে’, ‘ভুবন মাঝি’, ‘পুত্র’, ‘খাঁচা’, ‘গেরিলা’, ‘পোস্টমাস্টার ৭১’ ও ‘জান্নাত’।