প্রধানমন্ত্রীর হাতে সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্টিয়ারিং: গণপূর্তমন্ত্রী
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের খুনিদের নতুন প্রজন্ম যেন জন্ম নিতে না পারে। খুনিরা একেক সময় একেক নামে আবির্ভূত হলেও লক্ষ্য একই। বারবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুনিদের লক্ষ্যে পরিণত হচ্ছেন। কারণ তাঁর ভেতরে আছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিচ্ছবি। প্রধানমন্ত্রীর কাছেই ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য দূর করে আধুনিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্টিয়ারিং দেখা যায়।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অডিটোরিয়ামে বঙ্গবন্ধুর ৪৪ তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত জাতির পিতার জীবন, কর্ম ও আদর্শ নিয়ে আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। আজ বুধবার রাজউক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী ও প্রতিক্রিয়াশীলরা মিলে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করেছে। আর বঙ্গবন্ধুর খুনিদের অগণতান্ত্রিক সরকারগুলো পুনর্বাসন করেছে। জিয়াউর রহমান নিজে বঙ্গবন্ধু হত্যার উপকারভোগী এবং মদদ দাতা। তিনি বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশের বাইরে পুনর্বাসন করেছেন। আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচার না করে তাদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করেছেন। পরে এরশাদ বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সরাসরি রাজনীতিতে পুনর্বাসন ও রক্ষা করেছেন। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিভিন্ন মিশনে চাকরি ও পদোন্নতি দিয়েছেন। জিয়াউর রহমান, এরশাদ ও খালেদা জিয়া একইরূপে কলঙ্কজনক অধ্যায় রচনা করে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের সব সুযোগ-সুবিধা দিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মীদের ধ্বংস করতে সহায়তা করেছেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্য শ ম রেজাউল করিম বলেন, ১৯৭১, ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট ও ৩ নভেম্বর, ২০০৪-এর ২১ আগস্টের আঘাতকারীরা এবং অন্তত ১৯ বার শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টাকারীরা একই সূত্রে গ্রোথিত। ১৭৫৭ সালে এসেছিল মীরজাফর নামে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশি ওই জাতীয় বিশ্বাসঘাতকেরা পশ্চিম পাকিস্তানিদের দোসর হিসেবে, ১৫ আগস্ট মোস্তাক-জিয়া নামে, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট এসেছে খালেদা জিয়া, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদ, তারেক রহমানের নামে।
গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, ৭৫ এর খুনিদের নতুন প্রজন্ম যেন আবার জন্ম নিতে না পারে। এই খুনিরা একেক সময় একেক নামে আবির্ভূত হলেও তাদের লক্ষ্য একই। বারবার শেখ হাসিনা খুনিদের লক্ষ্যে পরিণত হচ্ছেন। কারণ তাঁর ভেতরে আছে বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার স্পিরিট। তাঁর কাছে বাংলাদেশ নিরাপদ। তাঁর কাছেই হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান-মুসলমানের সম্প্রীতির বাংলাদেশকে খুঁজে পাওয়া যায়। তার কাছেই ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য দূর করে আধুনিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্টিয়ারিং দেখা যায়।
রাজউকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে কখনো বিচ্যুত হবেন না। আমি চাই আরও স্বচ্ছতা, জবাবদিহি আরও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে আপনারা কাজ করবেন। মনে রাখবেন সাধারণ মানুষের করে টাকায় আপনাদের বেতন দেওয়া হয়। একজন মানুষও যেন সেবা নিতে এসে রাজউক থেকে কষ্ট নিয়ে বেরিয়ে না যায়।
অনুষ্ঠানের মুখ্য আলোচক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, একটি রাষ্ট্রের মালিকানা আমরা পেয়েছি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে। সেটি হারিয়ে যায় ৭৫ সালের ১৫ আগস্টে। শেখ হাসিনার নেতৃত্ব আমাদের জন্য এখন গৌরবের। শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় অবদান ক্যান্টনমেন্ট থেকে বের করে আনা গণতন্ত্র।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার বলেন, বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু নেই। বঙ্গবন্ধু ছোটবেলা থেকেই তাঁর আদর্শে অবিচল। বাংলার মানুষের মুক্তির জন্য বঙ্গবন্ধু সারাটি জীবন উৎসর্গ করেছেন।
সভাপতির বক্তব্যে রাজউক চেয়ারম্যান ড. সুলতান আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধুই একমাত্র কিংবদন্তি, যিনি আপসহীনভাবে কর্মের মধ্য দিয়ে সকলের আস্থা তৈরি করতে পেরেছিলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন রাজউকের সদস্য (পরিকল্পনা) সাঈদ নূর আলম, স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি কাজী গোলাম নাসির ও রাজউক কর্মচারী শ্রমিক লীগের সভাপতি মো. আব্দুল মালেক মিয়া প্রমুখ। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ও রাজউকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শেষে রাজউক ভবনে আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর ওপর চিত্রকর্ম প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া বিভিন্ন চিত্রকর্মের শিল্পীদের মধ্য থেকে নির্বাচিত ৫ জনকে পুরস্কার দেওয়া হয়। দোয়া মাহফিল শেষে রাজউক কর্মচারী শ্রমিক লীগের উদ্যোগে গণভোজের আয়োজন করা হয়।