ঠিকানা পেলেন 'আলোর ফেরিওয়ালা' জালাল উদ্দিন
ঠিকানা পেলেন ‘আলোর ফেরিওয়ালা’ জালাল উদ্দিন। তাঁর ঠিকানা এখন চাঁপাইনবাবগঞ্জের ‘মহানন্দা প্রবীণ নিবাস’ নামের একটি বৃদ্ধাশ্রম।
গত শনিবার প্রথম আলোয় ‘“আলোর ফেরিওয়ালা” জালালের এখন থাকার জায়গা নেই’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এটি দেখে প্রবীণ নিবাসের সভাপতি, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপপরিচালক আবদুস সালাম এ প্রতিবেদকের মাধ্যমে জালাল উদ্দিনকে এখানে থাকার আহ্বান জানান। আহ্বানে সাড়া দেন তিনি। এ পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার বিকেলে রাজশাহীতে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জালাল উদ্দিনকে মহানন্দা প্রবীণ নিবাসে নিয়ে আসেন। সঙ্গে ছিলেন রাজশাহী বন্ধুসভার সভাপতি ফারুক হোসেন ও জালাল উদ্দিনের এক আত্মীয়া।
জালাল উদ্দিনের হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান আবদুস সালাম। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ নিবাসের সাধারণ সম্পাদক গিয়াসুর রহমান, কল্যাণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, সম্মানী পরামর্শক সমাজসেবা অধিদপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত উপপরিচালক মোস্তাফিজুল হক প্রমুখ। জালাল উদ্দিনকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান চাঁপাইনবাবগঞ্জ বন্ধুসভার সদস্যরাও। জালাল উদ্দিনের উদ্দেশে আবদুস সালাম বলেন, ‘আপনার মতো নিবেদিতপ্রাণ একজন গুণী মানুষকে পেয়ে আমরা আনন্দিত। আপনার চিকিৎসাসহ সব দায়িত্ব এখন আমাদের। আজীব আপনি এখানে থাকতে পারবেন। এটাকে আপনি নিজের বাড়ি মনে করে থাকবেন।’ সন্ধ্যায় জালাল উদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে খোঁজখবর নেন নারীদের সংগঠন জাগো নারী বহ্নিশিখা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আহ্বায়ক ফারুকা বেগম, সদস্যসচিব মনোয়ারা খাতুন প্রমুখ।
রাজশাহীতে ৩৮ বছর ধরে সমাজের পিছিয়ে পড়া ছেলেমেয়েদের বিনে পয়সায় পড়াশোনা চালিয়ে আসছেন জালাল উদ্দিন। এ জন্য তিনি পৈতৃক সব সম্পত্তি বিক্রি করে খরচ করেছেন। তাঁর এই কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে ভেবে বিয়েই করেননি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুটি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী জালাল উদ্দিন ভালো চাকরি পেয়েও করেননি সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য কাজ করবেন বলে। নিজের সম্পদ, ঘরবাড়ি বলতে আজ কিছুই নেই তাঁর। অসুস্থ শরীর নিয়ে তিনি রাজশাহী প্রেসক্লাবে আশ্রয় নিয়েছিলেন। জালাল উদ্দিনের শিক্ষা কার্যক্রমের ওপর ২০০৮ সালের ১১ অক্টোবর প্রথম আলোর সাপ্তাহিক ক্রোড়পত্র ছুটির দিনে ‘আলোর ফেরিওয়ালা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।