তিন সাঁওতাল হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে নাম নেই প্রধান আসামির, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ
তিন সাঁওতাল হত্যা মামলার চূড়ান্ত অভিযোগপত্রে প্রধান আসামিসহ গুরুত্বপূর্ণ আসামিদের নাম বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। রোববার বেলা তিনটায় গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর সড়কের আমতলি এলাকায় সাঁওতাল সম্প্রদায়ের লোকজন এ কর্মসূচি পালন করেন। বিকেল পৌনে পাঁচটা পর্যন্ত চলে এ কর্মসূচি। এতে সড়কের দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে।
এর আগে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার আদিবাসী পল্লি মাদারপুর এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শতাধিক সাঁওতাল সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম-ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির অবস্থান ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচিতে যোগ দেন। এ সময় সেখানে বক্তব্য দেন সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে, আদিবাসী নেতা বার্নাবাশ, রাফায়েল হাসদা, প্রিসিলা মুরমু, স্বপন শেখ, সুফল হেমব্রম, হবিবুর রহমান, সিপিবি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সভাপতি তাজুল ইসলাম প্রমুখ।
ফিলিমন বাস্কে বলেন, ‘২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় সাঁওতাল পল্লিতে সন্ত্রাসীদের হামলা ও পুলিশের গুলিতে তিনজন সাঁওতাল নিহত হন। সন্ত্রাসীরা পুড়িয়ে দিয়েছে আদিবাসী সাঁওতাল শিশুদের স্কুলটি। তখন অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও নির্যাতনের ঘটনাও ঘটে। এতে আহত হয়েছেন অসংখ্য সাঁওতাল। এসব ঘটনার পর সাঁওতালরা হত্যা মামলা করেন। মামলার প্রায় তিন বছর পর আজ রোববার চূড়ান্ত অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় পুলিশ। তবে অভিযোগপত্রে মামলার প্রধান আসামি সাবেক সাংসদ আবুল কালাম আজাদসহ গুরুত্বপূর্ণ আসামিদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি এই চার্জশিটের মাধ্যমে সাঁওতালদের সঙ্গে পরিহাস করা হয়েছে।’
ফিলিমন বাস্কে বলেন, ‘অবিলম্বে এই মামলার চার্জশিট সংশোধন করে ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে যে মামলা করা হয়েছে, তার আলোকে পুনরায় চার্জশিট দেওয়া হোক। বাদ দেওয়া আসামিদের বিরুদ্ধে ভিডিও ফুটেজ, ছবি ও চাক্ষুষ সাক্ষীও বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ আমাদের কাছে আছে।’
আদালতে জমা দেওয়া চার্জশিটের প্রতিবাদে ৩০ জুলাই সংবাদ সম্মেলন ও ১০ আগস্ট গোবিন্দগঞ্জে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সাঁওতালরা।
তিন সাঁওতাল হত্যার দুই বছর আট মাস পর মামলাটির চূড়ান্ত অভিযোগপত্র রোববার গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে জমা দেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) গাইবান্ধা ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল হাই সরকার। এতে গোবিন্দগঞ্জের সাপমারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বুলবুল আহম্মেদ, একই ইউনিয়নের সদস্য শাহ আলম ও আইয়ুব আলী ও রংপুর চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম-অর্থ) নাজমুল হুদাসহ ৯০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।