উত্তাল সাগরে যেভাবে বেঁচে ছিলেন ভারতীয় জেলে
উত্তাল সাগরে ঢেউয়ের সঙ্গে টানা চার দিন লড়াই করে বেঁচে ছিলেন ভারতীয় জেলে রবীন্দ্রনাথ দাস। ট্রলার ডুবে যাওয়ার পর বাঁশসহ ট্রলারের ভাসমান সরঞ্জাম ধরে ভেসে ছিলেন। তাঁর চোখের সামনে একে একে পানিতে তলিয়ে গেছেন ট্রলারের ১৪ জেলে। ভাসতে থাকা এই জেলেকে গত বুধবার উদ্ধার করেছিলেন বাংলাদেশি মালিকানাধীন কেএসআরএম গ্রুপের জাহাজ এমভি জাওয়াদের নাবিকেরা।
জাহাজটি বন্দরের বহির্নোঙরে ফিরে আসার পর গতকাল শুক্রবার উদ্ধার হওয়া জেলেকে পতেঙ্গায় আনা হয়। পতেঙ্গায় বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি জেটিতে উদ্ধার করা জেলেকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি করা হয়। সেখানে তিনি বর্ণনা দেন কীভাবে সাগরে লবণাক্ত পানি ও উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে ছিলেন।
রবীন্দ্রনাথ দাস সাংবাদিকদের জানান, গভীর সাগরের ভারতীয় অংশে মাছ ধরতে গিয়ে খারাপ আবহাওয়ার কবলে পড়ে তাঁদের ট্রলারটি। শনিবার সকালে উত্তাল ঢেউয়ের মুখে পড়ে হঠাৎ ট্রলারটি উল্টে ডুবে যায়।
রবীন্দ্রনাথ দাস আরও জানান, ডুবে যাওয়ার পর ট্রলারের ১৫ জনের সবাই বাঁশ ও ভাসমান সরঞ্জাম ধরে আড়াই দিনের মতো ভেসে ছিলেন। এরপর ঢেউয়ের কারণে সবাই আলাদা হয়ে যান। তিনি বাঁশ ধরে ভেসে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথ দাসকে উদ্ধার করার জন্য এমভি জাওয়াদের নাবিক, কেএসআরএম গ্রুপ, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। তাঁর বাড়ি ভারতের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায়। এমভি জাওয়াদের ক্যাপ্টেন এস এম নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, ভারত থেকে ক্লিংকার নিয়ে তাঁরা চট্টগ্রাম বন্দরে ফিরছিলেন। বুধবার সকালে বন্দর সীমানার বাইরে কুতুবদিয়ায় একজনকে ভাসতে দেখেন তাঁরা। নিশ্চিত হওয়ার পর কেএসআরএম গ্রুপের কার্যালয়ে যোগাযোগ করেন তাঁরা। এ সময় কোস্টগার্ড ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীকেও জানানো হয়। অনুমতি আদায় করার পর তাঁরা জাহাজ ঘুরিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন।
কেএসআরএম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিম বলেন, উদ্ধার জেলেকে কোস্টগার্ড কার্যালয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে পতেঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হবে। পরে দেশে ফেরার বিষয়ে প্রক্রিয়া শুরু হবে।