চট্টগ্রাম বেড়েছে টেম্পোর ভাড়া

চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরের প্রায় সব রুটে কোনো ঘোষণা ছাড়াই ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন টেম্পো জাতীয় গাড়ির চালকেরা। তাঁদের দাবি, গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। সেই বাড়ানো দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য করতে তাঁরা দাম বাড়িয়েছেন। তবে বিআরটিএ বলছে সরকারি ঘোষণা আসার আগে এভাবে নিজ উদ্যোগে দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। দাম বাড়া নিয়ে প্রতিদিন যাত্রীদের সঙ্গে চালকদের বচসা চলছে।
বিআরটিএর হিসাব অনুযায়ী, চট্টগ্রাম নগরে টেম্পো জাতীয় গাড়ি চলার নিবন্ধিত রুট আছে ১৬টি। তবে রুটগুলো ভেঙে এখন অন্তত ২৫টিতে দাঁড়িয়েছে। এসব রুটে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত মিলিয়ে তিন হাজারের ওপর টেম্পো চলাচল করছে। এই টেম্পোগুলো নগরের বাসিন্দাদের অন্যতম প্রধান যাতায়াতের মাধ্যম।
দুই থেকে পাঁচ টাকা পর্যন্ত ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। যাত্রীরা বলছেন, সাধারণ চোখে টাকার অঙ্কটা কম দেখালেও মাস শেষে সেটি আয়-ব্যয়ে বড় পার্থক্য তৈরি করবে।
১ জুলাই থেকে গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাসের (সিএনজি) ক্ষেত্রে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৪০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৩ টাকা করা হয়েছে। অর্থাৎ দাম বেড়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। কিন্তু চালকেরা দাম বাড়ানোর অজুহাত দেখিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে প্রতিদিন বিপুল টাকা আদায় করে নিচ্ছেন।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের দাম কয়েক টাকা বাড়লেই চালক-মালিকেরা অনেকগুণ বেশি ভাড়া বাড়িয়ে দেন। দেখা যায় সারা দিন মিলিয়ে গ্যাসে বাড়তি দাম দিতে হলো ৫০ টাকা, কিন্তু চালকেরা এক ট্রিপেই ৫০ টাকার বেশি বাড়তি আদায় করে নেন যাত্রীদের কাছ থেকে। যে হারে গ্যাসের দাম বেড়েছে সেই হারে সরকারকে ভাড়া নির্ধারণ করে দিতে হবে। না হলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হবে।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরের পাঁচটি রুটে সরেজমিনে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। চকবাজার থেকে দুই নম্বর গেটের নির্ধারিত ভাড়া ছিল পাঁচ টাকা। এখন নেওয়া হচ্ছে সাত টাকা করে। চকবাজার থেকে বারেক বিল্ডিং পর্যন্ত রুটেও ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এই রুটেও প্রতিটি স্টপেজে দুই টাকা করে বাড়তি নেওয়া হচ্ছে। বহদ্দারহাট থেকে আমতল পর্যন্ত নির্ধারিত ভাড়া আট টাকা হলেও এখন নেওয়া হচ্ছে ১০ টাকা। অন্যদিকে জিইসি মোড় থেকে এ কে খান পর্যন্ত আগে ভাড়া ছিল ১০ টাকা। এখন নেওয়া হচ্ছে ১৫ টাকা করে। আবার দেওয়ানহাট থেকে অলংকার রুটে কোনো নিয়মের বালাই নেই। সেখানে যাত্রী থেকে ওঠা–নামা করলেই ১০ টাকা করে নেওয়া হয়। এ বিষয়ে অন্তত তিন রুটের ১০ জন চালকের সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর। তাঁরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া বাড়ানো হয়নি। এখন গ্যাসের দাম বেড়েছে। তাই কিছুটা ভাড়া বাড়িয়েছেন তাঁরা।
তবে বিআরটিএ–এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মনজুরুল হক বলেন, ‘এভাবে ভাড়া বাড়ানোর কোনো নিয়ম নেই। যতক্ষণ না আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা আসবে না তত দিন ভাড়া বাড়ানো যাবে না। বিষয়টি আমাদের বিবেচনায় আছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’