ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে গণধোলাই
নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় এক মাদ্রাসাছাত্রীকে (১১) ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে ওই মাদ্রাসার মুহতামিমকে (অধ্যক্ষ) গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন স্থানীয় ব্যক্তিরা। শুক্রবার সকালে পৌর শহরের একটি কওমি মহিলা মাদ্রাসায় এই ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর বিকেলে ওই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে পৃথক দুটি ধারায় মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি ধর্ষণের চেষ্টা, অপরটি ধর্ষণ মামলা।
অভিযুক্ত ওই অধ্যক্ষের নাম আবুল খায়ের বেলালী। তাঁর গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার আটগাঁও ইউনিয়নের একটি গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অভিযুক্ত আবুল খায়ের বেলালী দীর্ঘদিন ধরে মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছিলেন। ওই মাদ্রাসায় বেশ কয়েকজন এতিম ও অসহায় মেয়েশিক্ষার্থী সেখানে থেকে লেখাপড়া করে। শুক্রবার সকাল নয়টার দিকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীকে অধ্যক্ষ তাঁর কক্ষে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালান। এ সময় মেয়েটির চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করেন এবং একই সঙ্গে ওই শিক্ষককে গণপিটুনি দিয়ে আটক করে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিক্ষককে থানায় নিয়ে যায়। বেলা তিনটার দিকে ওই ছাত্রীর চাচা বাদী হয়ে কেন্দুয়া থানায় ধর্ষণচেষ্টার মামলা করেন। পরে ওই মামলায় শিক্ষক আবুল খায়ের বেলালীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
এদিকে ওই শিক্ষককে আটকের পর একই মাদ্রাসার আরেক ছাত্রী তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে অধ্যক্ষ আবুল খায়ের বেলালী ওই মেয়েকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগে বলা হয়। ঘটনাটি কাউকে যেন না জানানো হয়, সে জন্য ছাত্রীটিকে ভয়ভীতি দেখানো হয়। তবে এই ঘটনায় ছাত্রীর মা বাদী হয়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন।
পৃথক দুটি মামলার বিষয় নিশ্চিত করে কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান বলেন, ওই অধ্যক্ষকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তাঁর বিরুদ্ধে কিছু ভয়ংকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। তিনি বিভিন্ন সময় শিশুদের ডেকে তাঁর কক্ষে এনে শরীর টেপানোর কথা বলে এ কাজ করেন। পরে শিশুদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ও কোরআন শরিফ হাতে দিয়ে বিষয়টি কাউকে যেন না জানানো হয়, সে বিষয়ে শপথ করান। তাঁকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।