যেভাবে এল ঈদের ঘোষণা
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ আজ মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবার উদ্যাপিত হবে ঈদুল ফিতর। ওই সিদ্ধান্ত গণমাধ্যমে প্রকাশের পর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসতে থাকে পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার খবর। প্রথম আলোর ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজেও অনেক পাঠক ঈদের চাঁদ দেখার খবর জানান। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে শুরু হয় আলোড়ন।
অবশেষে আজ রাত ১১টার দিকে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ ফের সংবাদ ব্রিফিংয়ে আসেন। তিনি জানান, দেশের আকাশে আজ চাঁদ দেখা গেছে। কাল বুধবার সারা দেশে ঈদ উদ্যাপিত হবে।
চাঁদ দেখার সংশোধিত ঘোষণার ব্যাপারে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, আজ রাত ১০টার পর কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার শতাধিক ব্যক্তি চাঁদ দেখেছেন বলে খবর আসে। তখন ওই খবরের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এরপর চাঁদ দেখা কমিটির সদস্যরা বৈঠক করেন। শরিয়তমোতাবেক পবিত্র কোরআন হাদিসের আলোকে চাঁদ দেখার সংশোধিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
চাঁদ দেখার সংশোধিত ঘোষণাপত্র
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রাত নয়টার সময় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, কোথাও চাঁদ দেখা যায়নি। পরে রাত ১০টার পরে কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী ও ভূরুঙ্গামারী উপজেলা এবং লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার শতাধিক ব্যক্তি আজ সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখেছেন বলে সংবাদ পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানিয়েছেন, পাঁচজন ব্যক্তি চাঁদ দেখেছেন। আরও ১১ জন দেখেছেন বলে জানিয়েছেন। শরিয়তমোতাবেক যদি কমপক্ষে দুজন ইমানদার ব্যক্তি চাঁদ দেখার ঘোষণা দেন, তাহলে সেই ঘোষণা মেনে নেওয়া উচিত। কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থে নয়, শরিয়তমোতাবেক কোরআন ও হাদিস অনুযায়ী যা করা উচিত, তা–ই ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। পরে যে সংশোধিত ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, তাও শরিয়তমোতাবেক। প্রথম দিকে কোথাও কোনো চাঁদ দেখার খবর পাওয়া যায়নি। পরবর্তী সময়ে সংশোধিত খবরটি এসেছে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ সংবাদ সম্মেলনে জানান, ‘রাত ১০টা ১৫ মিনিট থেকে চাঁদ দেখার খবর আসে। অন্যান্য জায়গায় তখন তারাবি হয়ে গেছে। আমরা নিজেরাও তারাবি পড়েছি। খবরগুলো অত্যন্ত সুন্দরভাবে যাচাই-বাছাই করার জন্য জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সদস্যদের নিয়ে বসেছি। আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামীকাল (বুধবার) সারা দেশে ঈদ উদ্যাপিত হবে।’
কুড়িগ্রাম জেলার জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন রাতে মোবাইল ফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার এলাকার লোকজন চাঁদ দেখেছে। তিনটি উপজেলা থেকে আমার কাছে ফোন এসেছে বারবারই। বিষয়টি নিয়ে সচিবের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাদের লিখিতভাবে জানাতে বলেন।’
সুলতানা পারভীন জানান, যখনই টিভি চ্যানেলে খবর আসে যে কাল ঈদ হবে না, তখন থেকে ফোন আসা শুরু হয়। ভূরুঙ্গামারী, নাগেশ্বরী ও ফুলবাড়ী উপজেলার লোকজন চাঁদ দেখার খবর জানিয়েছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক মুস্তাফিজুর রহমান মোবাইল ফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাত নয়টা পর্যন্ত আমরা অফিসে ছিলাম। হঠাৎ করে ১০টা-পৌনে ১০টার দিকে ভূরুঙ্গামারীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফোন দিলেন যে তাঁর সামনে ৩০ থেকে ৪০ জন আছেন, যাঁরা চাঁদ দেখেছেন।’
আরও পড়ুন