বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম লেখা হয়েছে ‘মুজিবর’, ‘চট্টগ্রাম’ লেখা হয়েছে ‘চট্রগ্রাম’, ‘বিশ্লেষণ’ লেখা হয়েছে ‘বিশ্লেষন’। এভাবে ১৩টি ভুল। এসব ভুল সাধারণ কিছুতে নয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ৪০৫ নম্বর কোর্সের প্রশ্নপত্রে। ভুলে ভরা এই প্রশ্নেই গত সোমবার পরীক্ষা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
হাতে লেখা এই প্রশ্নপত্রের শুরুতেই চট্টগ্রাম বানানটি লেখা হয়েছে ‘চট্রগ্রাম’। অর্থাৎ ‘ট্ট’ এর জায়গায় লেখা হয়েছে ‘ট্র’। ৩ নম্বর প্রশ্নে লেখা হয়েছে ‘ব্যক্তিত্ব ও হতাশার মধ্যেকার সম্পর্ক বিশ্লেষন কর’। এখানে ‘বিশ্লেষন’ ‘ন’ দিয়ে লেখা হয়েছে, অথচ শুদ্ধ বানান হবে ‘বিশ্লেষণ’। ৪ নম্বর প্রশ্নে লেখা হয়েছে, ‘নবাব স্যার সলিমুল্লাহর ব্যক্তিত্ব গঠনে তাঁর সমসাময়িক আর্থসামাজিক ও ধর্মীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতি কি ভূমিকা পালন করেছিল?’ এখানে ব্যবহার করা হয়েছে ‘কি’। কিন্তু ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নে ব্যবহার করতে হবে ‘কী’। ৫ নম্বর প্রশ্নে ‘রাজা রামমোহন রায়ের ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্যসমূহ চিহ্নিত কর, এই বৈশিষ্ট্যসমূহ কিভাবে সংষ্কারক হিসেবে তাঁর ভূমিকাকে প্রভাবিত করেছিল? আলোচনা কর।’ এখানে ‘কিভাবে’ না হয়ে ‘কীভাবে’ হবে। এ ছাড়া ‘সংস্কারক’ শব্দে ‘ষ’ ব্যবহার করা হয়েছে, শুদ্ধ বানান হবে ‘স’ দিয়ে। ৬ নম্বর প্রশ্নে মুজফফর আহমদের ও ৭ নম্বর প্রশ্নে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ইংরেজি নামের বানানটি ভুল লেখা হয়েছে। শুধু এটি নয়, ভুল লেখা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু’ নামের ইংরেজি বানানও। আবার ৮ নম্বর প্রশ্নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম লেখা হয়েছে ‘মুজিবর’। ৯ নম্বর প্রশ্নে ‘কর্মকান্ড’ লেখা আছে, প্রমিত বাংলা বানান অনুসারে ণ+ড হবে। এ ছাড়া টীকা প্রশ্নে বাংলায় মাওলানা ভাসানী বানানটি ঠিক থাকলেও ইংরেজিতে ভুল লেখা হয়েছে। সবশেষে এ কে ফজলুল হকের ইংরেজি নামের বানানে ‘হক’ বানান ভুল লেখা হয়েছে।
একদিকে হাতে লেখা, অন্যদিকে ভুলে ভরা—এমন প্রশ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের নজরে এসেছে। তাঁদের দুজন নাম প্রকাশ না করে বলেন, প্রশ্নপত্র তৈরিতে দায়বদ্ধতার অভাব রয়েছে। তা ছাড়া চূড়ান্ত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কেন হাতে লেখা হবে? আর এত ভুলই বা কেন হবে?
পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান ভূঁইয়া মো. মনোয়ার কবীর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে বিভাগের সভাপতি আনোয়ারা বেগম বলেন, রাজনীতিবিজ্ঞান একটি জটিল বিষয়। আর প্রশ্ন মানুষই তৈরি করেছে, এখানে ভুল থাকতেই পারে।