রামপুরায় তরুণীকে ধর্ষণের পর পাশবিক নির্যাতনের সত্যতা মিলেছে, আদালতকে জানাল পুলিশ
রাজধানীর রামপুরা এলাকায় ২০ বছরের এক তরুণীকে আটকে রেখে যৌন নির্যাতন চালানোর অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে রামপুরা থানা-পুলিশ। ধর্ষণের পর দুই মাস আটকে রেখে চোখে মরিচের গুঁড়া দেওয়াসহ নানাভাবে নির্যাতন করা হয় ওই তরুণীকে।
রামপুরা থানা-পুলিশ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতকে এই তথ্য জানিয়েছে। তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে ৪ এপ্রিল তিনজনের বিরুদ্ধে সিএমএম আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে তারা। এঁদের মধ্যে দুজন প্রাপ্তবয়স্ক, অন্যজন কিশোর। অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিরা হলেন অহিদুল ইসলাম শুভ (২৩), মোসলেম ঘরামি (২০) ও কিশোর (১৭)।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রামপুরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হানিফ উদ্দিন সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, চাকরি দেওয়ার কথা বলে ওই তরুণীকে ডেকে নিয়ে দুই মাস ঘরে আটকে রেখে ধর্ষণ করে নির্যাতন করা হয়। ডাক্তারি পরীক্ষায়ও বলা হয়েছে, ওই তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়। ভুক্তভোগী তরুণীর বাড়ি লক্ষ্মীপুরে।
রামপুরার বাসায় আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে গত বছরের ১১ নভেম্বর তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী তরুণী। মামলার এজাহারে তরুণী বলেছেন, গত ৫ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে তাঁকে ধর্ষণ করেন অহিদুল। বাধা দেওয়ায় শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন তিনি। সিরিঞ্জ দিয়ে তাঁর চোখের নিচ থেকে রক্ত বের করেছেন অহিদুল। কানের ভেতরে কাঠি ঢুকিয়ে কান নষ্ট করা হয়েছে। চোখে মরিচের গুঁড়া দিয়েছেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, মামলার প্রধান আসামি অহিদুল ইসলাম শুভ ওই তরুণীকে মারধর করে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ করেছে। আর অপর আসামি মোসলেম ঘরামি এবং কিশোর আসামি ওই তরুণীকে মারধর করে।
পুলিশ বলছে, উচ্চমাধ্যমিক পাস ওই তরুণীর নানির বাড়ি লক্ষ্মীপুরের যে গ্রামে, সেখানেই প্রধান আসামি অহিদুলের বাড়ি। আগে থেকে অহিদুলের বাবা-মায়ের সঙ্গে তরুণীর মায়ের পরিচয় ও ভালো সম্পর্ক ছিল। আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় গত বছরের আগস্ট মাসে তরুণীর মা আসামি অহিদুলের মাকে ফোন করেন। ঢাকায় নিয়ে মেয়েটিকে চাকরি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। পরে মেয়েটি ঢাকায় এসে অহিদুলদের বাসায় ওঠেন। এর কয়েক দিন পর রামপুরা এলাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকরির ব্যবস্থা করেন অহিদুল।
তরুণীর ওপর নির্যাতনের খবর জেনে অহিদুলের বড় বোন রামপুরা থানায় সবকিছু জানান। গত বছরের ১৮ অক্টোবর অহিদুলেরা পূর্ব রামপুরার পাঁচতলা বাসার নিচতলা ভাড়া নেন। বাড়িওয়ালার কাছে মেয়েটিকে নিজের বোন বলে পরিচয় দেন আসামি অহিদুল।